গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় উচ্ছেদ হওয়া সাঁওতালদের পুনর্বাসনে আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে বলে হাইকোর্টে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদের দাখিল করা প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এই প্রাথমিক কাজের অগ্রগতি শতকরা ৯০ ভাগ। প্রকল্পটির আওতায় ৩০০ পরিবারকে পুনর্বাসন করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
হাইকোর্টে জমাকৃত প্রতিবেদনে বলা হয়, গৃহহীন সাঁওতাল পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য পাশ্ববর্তী কাটাবাড়ি মৌজায় ১০ একর জমি চিহ্নিত করে আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। বর্ণিত কাটাবাড়ি ইউনিয়নে বোগদহ আশ্রায়ন, ফকিরগঞ্জ আশ্রয়ন, ফুলহার-১ আশ্রয়ন প্রকল্পে ৩০০ পরিবারকে পুনর্বাসন করা যাবে।
আদালতে জেলা প্রশাসকের পক্ষে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল টাইটাস হিল্লোল রেমা। উচ্ছেদ হওয়া সাঁওতালদের পুনর্বাসনের অগ্রগতি আগামী ১৫ মে’র মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রতিবেদন অনুযায়ী রংপুর সুগার মিলের বাণিজ্যিক খামার এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী শিশুদের শিক্ষার জন্য স্থানীয় মাদারপুর এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ কর্মসূচি গ্রহণ এবং তাদের স্বল্পসুদে ঋণ প্রদান এবং আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় তাদের পুনর্বাসনসহ খাসজমি বন্দোবস্ত প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি উচ্ছেদ হওয়া সাঁওতালদের পুনর্বাসনে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চান হাইকোর্ট। এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক ও গোবিন্দগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত রুলের পাশাপাশি এই আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ এলাকায় ওই সংঘর্ষে কয়েকজন সাঁওতাল নিহত ও পুলিশসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। অগ্নিসংযোগ করা হয় সাঁওতালদের ঘরে।