॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ কাপ্তাই হ্রদে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে পাহাড়ের বৈসাবি উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে পাহাড় সেজেছে নানা বৈচিত্র্যের ঐক্যতানে। প্রতিটি পরিবারের মাঝে যেন আনন্দের বারতা। সকল দুঃখ গ্লানি ও জ্বরা মুছে ফেলে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করতে পাহাড়ের মানুষ তৈরী হয়েছে। পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ উৎসব তিন দিনের হলেও পাহাড়ে পক্ষকাল ব্যাপী চলে বিভিন্ন অনুষ্ঠান মালা। এই উৎসবের আনন্দকে উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ ছুটে এসেছে পাহাড়ী পল্লী গুলোতে। রাঙ্গামাটির হোটেল গুলোতে এখন পর্যটকের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
পাহাড়ে আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের বৈসাবী উৎসব। ফুল বিজুর দিন আজ ১২ এপ্রিল নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে উৎসবের সূচনা হবে, ১৩ এপ্রিল ২য় দিন মুল বিজু ও ১৪ এপ্রিল ৩য় দিন গোইজ্জ্যা-পোজ্জা দিন নামে পালন করবে এখান ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীরা। চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে পাহাড়ের আদিবাসীরা মেতেছে বৈসাবী উৎসবে। বৈসাবীকে ঘিরে সপ্তাহ জুরে পাহাড়ে চলছে নানা আয়োজন।
চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিনকে বলা হয় ফুল বিজু। উৎসবের প্রথম দিনে চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমা সহ সকল ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর জনগন বন থেকে ফুল আর নিমপাতা সংগ্রহ করে সেই ফুল দিয়ে ঘর সাজায়।
আর চৈত্র সংক্রান্তির দিনকে বলা হয় মুল বিজু। ঘরে ঘরে রান্না হয় ঐতিহ্যবাহী খাবার পাচন। তা দিয়ে দিন ভর চলে অতিথি আপ্যায়ন। এর সাথে থাকবে উপজাতীয় দের তৈরী দেশী চোলাই মদ সহ নানা পিঠা ও পায়েশ।
অন্যদিকে বাংলা বর্ষবরণকে ঘিরে চলছে নানা প্রস্তুতি। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে দিনব্যাপী বর্ষবরণের বিভিন্ন আয়োজন। পাহাড়ের বৈসাবী ও বাংলা বষবরণের আয়োজন নিয়ে পার্বত্য জনপদে এখন উৎসবের আমেজ।
পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-তাত্তিক জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবীকে কেন্দ্র করে তিনদিন উৎসব করার কথা থাকলেও এ্ উৎসব চলে সপ্তাহব্যাপী। আদিবাসী সংস্কৃতি মেলা, ঐতিহ্যবাহী আদিবাসী খেলাধূলা, নদীতে ফুল ভাসানো, বয়স্ক ¯œান আর পানি খেলার মধ্যে দিয়ে চলবে এ উৎসব।
একদিকে বাংলা বর্ষবরণ অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর প্রধান ধর্মীয় উৎসব বৈসাবী এ দুটো মিলে পাহাড়ে বাঙ্গালী ও পাহাড়ীদের মিলন মেলায় পরিনত হয়।
বাংলা বর্ষবরণ ও বৈসাবীর পক্ষকালব্যাপী পাহাড়ের এ দীর্ঘ আনন্দ আয়োজন সফল করতে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
উৎসবের শেষ দিনে মারমা সম্প্রদায় উদযাপন করে ঐতিহ্যবাহী পানি খেলা উৎসব। এর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে পাহাড়ের এই বৈসাবী উৎসব।