চৈত্রের শেষ সময়ে পাহাড়ে শুরু হয়েছে জুম পোড়ানোর মৌসুম। পুরাতন বছরের সকল অপ্রাপ্তিকে ধুয়ে মুছে নতুন দিনের শুভসূচনায়, কোকিলের কুহুকুহু ডাকে পাহাড়ে ফিরে আসে পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব (বৈসাবি)।
ত্রিপুরারা এই উৎসবকে বলেন, বৈসুক, মারমারা সাংগ্রাই আর চাকমারা বলেন বিঝু। ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড় যেন সেজে ওঠেছে নতুনরূপে ।
তাই এই উৎসব আর উৎসব থাকে না, রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সকলক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারকারী এই সামাজিক উৎসব একইসাথে সাক্ষ্য দিয়ে যায় পাহাড়ের স্বকীয় সমাজ-সাংস্কৃতিক চেতনার উপস্থিতি। রাস্তায় রাস্তায়, দেওয়ালে দেওয়ালে স্থানীয় শিশু-কিশোর-যুবকেরা লিখতে থাকে “বৈসাবি মানে উৎসব, বৈসাবি মানে আনন্দ, বৈসাবি মানে চেতনা”। তাই কিশোরী-যুবতী কিংবা রমণীরা ভালোবাসেন নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী অলংকার আর পোশাকের উজ্জ্বল স্বাতন্ত্র্যে নিজেদের সাজাতে।
পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব “বৈসাবি” উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে শুরু হয়েছে ২০দিন ব্যাপী বৈসাবি মেলা। শুক্রবার খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ মেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মীর মুশফিকুর রহমান, ডিজিএফআই অধিনায়ক কর্ণেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, সদর জোন কমান্ডার লে. কর্ণেল জি এম সোহাগ, জেলা প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. আলী আহমেদ খান, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার মেজর মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য খগেশ্বর ত্রিপুরা, নিগার সুলতানা ও শতরূপা চাকমাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এতে প্রর্দশন করা হয় বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী ডিসপ্লে।
এদিকে বৈসু, সাংগ্রাই, বিঝু (বৈসাবি) এবং বাংলা নববর্ষ ১৪২৪ বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় উদযাপনের লক্ষে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ উদ্যোগে ১১ এপ্রিল জেলা পরিষদ চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা উদ্বোধন ও সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঐতিহ্যবাহী গড়াইয়া নৃত্য, পানি খেলা এবং বিভিন্ন সেক্টরে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরুপ গুণীজন সংর্বধনাসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।