॥ মোঃ- আবদুল নাঈম মোহন ॥ রাঙ্গামাটি জেলা শহর মাদকের ক্রয়-বিক্রয়, সেবন ও লেনদেন বর্তমানে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, নতুন প্রজন্মের কাছে এটি আর নিষিদ্ধ কিছু মনে হচ্ছে না। বর্তবানে হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মাদক। শহর জুড়ে দিনে-রাতে অনেকটা প্রকাশেই বিক্রি হচ্ছে জীবন বিনাশকারি মাদকদ্রব্য। আর এসব নেশাদ্রব্য ক্রয় বিক্রয় ও উঠতি বয়সের তরুনদের কাজে লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে নিচ্ছে বিশাল সিন্ডিকের্ট। মাদকের ভয়াবহ তরুণ থেকে শুরু করে প্রায় সব বয়সীরা বর্তমানে আক্রান্ত। মাদকের এ থাবা বর্তমানে শহর থেকে বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতেও ঢুকে পড়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে চলছে মাদকের জমজমমাট বাণিজ্য। তবে মাদক বিক্রির তালিকায় বর্তমানে প্রথম রয়েছে ইয়াবা। যাকে সেবনকারিরা “গুটি” ও বাবা বলে থাকেন। মরণনেশা ইয়াবার সর্বনাশা থাবায় হাজার হাজার পরিবারের সন্তানের জীবন আজ বিপন্নের পথে। এমন সন্তানদের বাবা-মায়ের কান্না এখন ঘরে ঘরে। অথচ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাকের ডগা দিয়ে প্রসার ঘটছে ইয়াবা ব্যবসার। সমাজের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও বিভিন্ন রাজনীতিক নেতাকর্মীরা এই ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টর সূত্র ও তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, সমাজের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, বিভিন্ন রাজনৈতি সংগঠনের কিছু নেতাকর্মী ও অসাধু সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী সিন্ডিকেট ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রন করছে। যে কারণে কোন ভাবেই ইয়াবার আগ্রাসন রোধ করা যাচ্ছে না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংস করে মাদক ব্যবসায়ারী হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ-লক্ষ টাকা। শহরের সর্বত্রই এখন হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় ‘ক্রেইজি ড্রাগ’ ইয়াবা। মাঝে মধ্যে পুলিশ কিছু বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করলেও মূলগর্ডফাদার থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। মাদকের ব্যবসা করে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে বাড়ি-গাড়ি মালিক হয়েছেন এমনও আছেন শহরে। সাম্প্রতিক সময়ে জেলার সর্বত্র মাদকের বিস্তার ঘটেছে আশংকাজনক হারে। একদিকে শহরের উঠতি বয়সের তরুণদের মাঝে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মাদকের ব্যবহার আর মাদকের এই থাবায় পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে অনেকেই। অন্যদিকে শহরে বেড়ে গেছে চুরি, ছিনতাই ও ছোটখাটো অপরাধ। এই ব্যবসার ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বেশিরভাগের বয়স ১৬ থেকে ৩২-এর মধ্যে। বর্তমানে শহরের প্রায় এলাকায় গুলোতে চলে মাদকের বেচাকিনা। রাঙামাটি শহরের প্রবেশমূখ মানিকছড়ি, রেডিও ষ্ঠেশন,ভেদভেদী মুসলিম পাড়া, উন্নয়ন বোর্ডের রেষ্ট হাউজ,সদর উপজেলার, হাসপাতাল এলাকায়, কে,কে,রায় সড়ক, হ্যাপীর মোড়, পরেষ্ট রোড়, ধোপাপাড়া গলি, পৌর বাস টার্মিনালের পাশে, নাপ্পি পট্রি, রাঙামাটি পার্ক, রির্জাভ বাজার নীচের রাস্তা, তবলছড়ি নিচের বাজার, স্বর্ণটিল তিন রাস্তা মোড়, নারকেল বাগান,আসামবস্তি ব্রিজের পরসহ আরো বিভিন্ন স্থানে চলে ইয়াবার ক্রয়-বিক্রয়।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানা অফিসার ইনর্চাজ মোহাম্মদ রশিদ জানান, বর্তমান সময়ে আমরা রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু বড়মাপের মাদকদ্রব্যসহ তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। সমাজকে মাদক মুক্ত করতে সচেতন মহলের সহযোগিতা কামনা করে তিনি আরো বলেন, যত বড় শক্তিশালী নেটওয়ার্কই থাকুক না কেন, তাদের কে কোনো প্রকার ছাড় দেবার সুযোগ নাই া। মাদকের ব্যাপারে কোনো প্রকার সুপারিশের কার্যকর হবে না। মাননীয় পুলিশ সুপার মহোদয় মাদকের উপর বিশেষ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনাও দিয়েছেন এবং আমরা সেভাবে কাজ করে যাচ্ছে।