কলম্বিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ভূমিধসে ধ্বংসস্তূপ ও কাদামাটির নিচ থেকে শত শত মানুষের মরদেহ উদ্ধার করেছেন নিরাপত্তা বাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা। শনিবার রাতে কয়েক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিপাতের পর কিছু নদীর পানি উপচে পুতুমায়ো রাজ্যের মকোয়া এলাকায় ভূমিধসের এ ঘটনা ঘটেছে।
ধ্বংসস্তূপের নিচে জীবিতদের উদ্ধারে হন্যে হয়ে খুঁজছেন উদ্ধারকর্মীরা। পুতুমায়োর এ ভূমিধসের ঘটনায় স্বজন হারিয়ে অনেকেই এখন বিলাপ করছেন। সেখানে তৈরি হয়েছে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের। ইকুয়েডরের সঙ্গে কলিম্বিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্ত এলাকার পর্বতের মাঝে পতুমায়োর রাজধানী মকোয়ার অবস্থান।
শনিবার মাঝরাতের ভারি বর্ষণে ঘুম থেকে চিরঘুমে চলে গেছেন অনেকেই; আহত হয়েছে আরো শতাধিক মানুষ। উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিরাপত্তা কর্মীদের। রাতের ওই বর্ষণের পর কাদামাটি দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে শহরের রাস্তা ও আশপাশের বাড়িঘরে। এতে চাপা পড়ে যায় শত শত বাড়িঘর; সমূলে উপড়ে পড়ে গাছপালা। আহতদের অনেকেই বলছেন, তীব্র গতিতে ধেঁয়ে আসা কাদামাটির হাত থেকে পালানোর সময় পর্যন্ত তারা পাননি।
রেডক্রস বলছে, ভূমিধসে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও আহত হয়েছে অন্তত ২০২ জন। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরও ২২০ জন। ভয়াবহ এ বিপর্যয় মোকাবেলায় দেশটির প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়াল স্যান্টোস জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
প্রাকৃতিক এ বিপর্যয়ে প্রাণহানি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। শনিবার তিনি জানিয়েছিলেন, ভূমিধসে নিহত হয়েছে ১৯৩ জন। কলম্বিয়ার এ প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা জানি না কত মানুষের প্রাণহানি ঘটতে যাচ্ছে। আমরা এখনও তল্লাশি চালাচ্ছি।
কলম্বিয়ার ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে শনিবার রাতের এ ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা। ১৯৮৫ সালে দেশটির ইতিহাসে ভয়াবহ এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় কলম্বিয়ার মানুষ। নেভাদো দেল রুইজ আগ্নেয়গিরির আগুন ছড়িয়ে পড়লে ওই সময় দেশটির প্রায় ২৫ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।