॥ মোঃ জুয়েল, সাজেক ॥ বাঘাইছড়ির সাজেক ইউনিয়নে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। গত দুয়েক মাস হতে সাজেকের প্রায় ৫০টি গ্রামের ২হাজারের অধিক পরিবারের মাঝে খাদ্যভাব দেখা দেয়। গ্রামের মানুষ গুলো অর্ধাহারে অনাহারে ও পাহাড়ী আলু ও লতা-পাতা খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা দরে।
খাদ্য সংকট দেখা দেয়া গ্রাম গুলো হচ্ছে, সাজেকের উদোলছড়ি, নতুন জৌপুই, পুরান জৌপুই, নিউ থাংমাং, ব্যাটলিংপাড়া, তারুমপাড়া, কমলাপুর, লংত্যাং, অরুণপাড়া, কাচ্ছ্যাপাড়া, শিয়ালদাই, গণ্ডাছড়া, থলছড়া, এগজ্যাছড়ি, মোন আদাম, ধাব আদাম, হলকপাড়া, উদলছড়ি, বদলছড়ি, নিমুইপাড়া, হগড়া হেজিং, দুলুছড়ি ও দুল বন্যা গ্রামে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এসব গ্রামে এখন প্রতি এক কেজি চালের দাম ৯০ থেকে ১২০ টাকা বলে জানান তাঁরা। অনেক উপজাতী পরিবার অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানান।
এদিকে গতকাল শনিবার সাজেকের নয়নং পাড়া এলাকায় সাজেকের খাদ্যসংখট মোকাবেলায় বাঘাছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেওয়া ৪হাজার ১শত কেজি চাউল বিতরন করা হয়। চাউল বিতরনীর সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বড়ঋষি চাকমা, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান দিপ্তিমান চাকমা। এছাড়াও বাঘাইছড়ি উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যন সহ স্থানীয় প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন অনুষ্টানের সভাপতিত্ব করেন সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলশন চাকমা।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা দুর্গম সাজেক ইউনিয়নের ব্যাটলিং তারুং পাড়ার কাউলা ত্রিপুরা খাদ্যাভাবে দশ কেজি চাউলের আশায় দুইদিন পায়ে হেটে প্রায় ৯০কি.মি. পথ পারি দিয়ে অবশেষে পেল খাদ্যসংখট মোকাবেলায় বাঘাছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেওয়া চাউল আর চাউল নিতে এসে তার এমন খাদ্যাভাবের বিবর্ষ বর্ণনা দেন কাউলা ত্রিপুরা কেবল কাউলা ত্রিপুরা নন ব্যাটলিং উদুলছড়ি পাড়ার নতুন কুমার চাকমাও একি বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমাদের গ্রামে চালের কেজি ৯০-১২০ টাকা আর আমাদের আয় নেই বললেই চলে তাই ৯০টাকা করে চাউল ক্রয়ের সামর্থ নেই, কোন রকম জুমচাষ করে চলতাম তবে এবছর জুমের ধান খুবই কম হয়েছে তাই আমাদের ঘরে খাবারের জন্য কোন চাউল নেই কার্বারীর মাধ্যমে জানতে পেরেছি সাজেকের চেয়াম্যান আমাদের জন্য ১০কেজি করে চাউলের ব্যবস্থা করেছে তাই খুশি হয়ে দুইদিন ধরে পায়ে হেটে এসে পৌছালাম চাউল নিতে।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, সাজেকের খাদ্যাভাব সর্ম্পকে আমাকে সাজেকের চেয়ারম্যান জানিয়েছে এবং এবিষয়ে আমি জেলাপ্রশাষণ ও ত্রান মন্ত্রানালয়েও চিঠি দিয়েছি আশা করছি দ্রুত সরকারি সাহায্য এসে পৌছাবে আপনাদের খাদ্যাভাব কিছুটা হলেও লাগব হবে, আপনারা আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন আমরা আপনাদের দূর্দিনে কাছে আসা আমাদের কর্তব্য তাই আমরা আপনাদের জন্য সরকারের নিকট বারবার আবেদন করছি যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি আপনারা কেউ মনোবল হারাবেন্না বর্তমান সরকার জনগণবান্ধব সরকার এই এলাকার জনগনের জন্য সরকারের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে তাই আশা করছি সরকার আপনাদের সাহায্যে অবশ্যই এগিয়ে আসবেন।
সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে দেখা যায় সাজেক এলাকার ৪০-৪৫টি দূর্গম গ্রামগুলোতে চলছে চরম খাদ্যাভাব। সাজেকের উদোলছড়ি, নতুন জৌপুই, পুরান জৌপুই, নিউ থাংমাং, ব্যাটলিংপাড়া, তারুমপাড়া, কমলাপুর, লংত্যাং, অরুণপাড়া, কাচ্ছ্যাপাড়া, শিয়ালদাই, গণ্ডাছড়া, থলছড়া, এগজ্যাছড়ি, মোন আদাম, ধাব আদাম, হলকপাড়া, উদলছড়ি, বদলছড়ি, নিমুইপাড়া, হগড়া হেজিং, দুলুছড়ি ও দুল বন্যা গ্রামে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এসব গ্রামে এখন প্রতি এক কেজি চালের দাম ৯০ থেকে ১২০ টাকা বলে জানান তাঁরা। অনেক উপজাতী পরিবার অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানান।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুর্গম সাজেকে অধিকাংশ মানুষ জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল। জুমচাষ করে যা উৎপাদন হয় তা দিয়ে সারা বছর কেটে
সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নেলশন চাকমা বলেন, গত দুয়েকমাস হতে সাজেকের প্রায় ৫০টি গ্রামের ২হাজারের অধিক পরিবারের মধ্যে তিব্র খাদ্য সংকট চলচে। আমি এবিষয়ে উপজেলাপরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় বারবার বিষয়টি উৎতাপন করেছি এবং ইউএনও বরাবরে খাদ্যসংখট মোকাবেলায় গত দ্ইুমাস আগে ৬শ মেট্রিকটন খাদ্য শষ্য বরাদ্দ চেয়ে দুর্যোগ ও ত্রান ব্যবস্থাপনা মন্ত্রানালয়ে আবেদন করেছিলাম এখন পর্যন্ত কোন সাড়া মিলেনি।
খাদ্যাভাব চরমে পৌছে যাওয়ায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে সমন্বয় করে উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে ৩০ হাজার টাকা ভাইস চেয়ারম্যানদের থেকে বিশ হাজার টাকা এবং উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানদের থেকে ২০ হাজার টাকা করে নিয়ে আমরা উভয়ের সহযোগিতায় ৫টি গ্রামের ৪১০ পরিবারের মাঝে দ্রুত চার হাজার একশ কেজি চাউল বিতরন করি যা প্রয়োজনের তুলনাই একেবারে নগন্য।