শান্তির পথের শুরু হয়েছিল এখান থেকে, এই প্রাচীন মাটি, এই পবিত্র ভূমি থেকে।–ট্রাম্প

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরবে এসে রোববার ৫৫টি মুসলিম প্রধান দেশের নেতাদের অংশগ্রহণে এক সম্মেলনে বক্তব্যে উগ্রপন্থিদের নিয়ে ট্রাম্প বলেন, “তাদেরকে এই পৃথিবী থেকে দূর করে দিন।”

আরব-ইসলামিক-আমেরিকান সামিট নামে রিয়াদে এই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অংশ নেন।

প্রেসিডেন্ট হয়ে কয়েকটি মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিতর্ক তৈরি করা ট্রাম্প সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইকে ‘সভ্যতার সংঘাতের’ বদলে ‘শুভ ও অশুভের যুদ্ধ’ বলেছেন।

তিনি বলেন, “এ লড়াই মানবজীবনকে ধ্বংস করতে চাওয়া বর্বর অপরাধী এবং এর সুরক্ষা দিতে চাওয়া সব ধর্মের সভ্য মানুষের মধ্যে।

“এর অর্থ হচ্ছে, ইসলামী উগ্রবাদের সংকট এবং এ থেকে উদ্বুদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সততার সঙ্গে লড়ে যাওয়া। একইসঙ্গে নিরপরাধ মুসলিম হত্যা, নারী নিপীড়ন, ইহুদি নির্যাতন এবং খ্রিস্টান নিধন একযোগে রুখে দাঁড়ানো।”

ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার জয়ের পথ সুগম করার পাশাপাশি নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার উপর নির্ভর করা দেশগুলোকে উদ্বেগে ফেলে। এখন নিজের দেশে রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি সামালে ধুকতে থাকা ট্রাম্প বক্তব্যে স্পষ্ট করেছেন, ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্যের সহযোগী হিসেবে কাজ করবে তবে বিনিময়ে আরও পদক্ষেপ চায় তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, “সারা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু শান্তির পথের শুরু হয়েছিল এখান থেকে, এই প্রাচীন মাটি, এই পবিত্র ভূমি থেকে।”

ট্রাম্প বলেন, “আমরা এখানে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বক্তব্য দিতে আসিনি, আমরা অন্যদের বলতে আসিনি কীভাবে জীবনযাপন করতে হবে, কী করতে হবে, কী হতে হবে বা কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে।

“তবে আমরা শুধু তখনই এই অশুভ থেকে মুক্তি পাব যদি সব শুভ শক্তি একত্রিত এবং শক্তিশালী হয়। এবং এক্ষেত্রে প্রত্যেকে তার দিকের কাজটা করে…মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এই শত্রু খতমে আমেরিকান শক্তির জন্য অপেক্ষা করে থাকতে পারে না।”

সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন বন্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলো।

আঞ্চলিক দ্বন্দ্বে ইরানকে মোকাবেলায় নেটোর মতো একটি আরব বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ছয় জাতির গালফ কোঅপারেশন কাউন্সিলের সঙ্গে বসেন ট্রাম্প।

ওই সভায় ইসলামি জঙ্গিদের বার্তা ছড়ানোর শক্তি-সামর্থ্য গুড়িয়ে দিতে একটি সেন্টার তৈরিতে সম্মত হয়েছে ট্রাম্প ও উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর নেতারা।

বিভিন্ন আরব নেতার সঙ্গে একের পর এক বৈঠকে ওই অঞ্চলে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানোর চিত্র ফুটে উঠেছে।

মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, “বিরূপ পরিস্থিতিতে আপনি চমৎকার কাজ করেছেন।”

শিগগিরিই মিশর সফরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। মিশরীয় এক জোড়া উজ্জ্বল কালো জুতাও বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প।

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির সঙ্গে বৈঠকে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির চেষ্টায় তিনি বলেন, তারা অনেক ‘সুন্দর সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে আলোচনা করেছেন কারণ যুক্তরাষ্ট্রের মতো সেগুলো আর কেউ তৈরি করেনি’।

বাহরাইনের বাদশা হামাদ বিন ইস আল-খলীফার সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেছেন, তাদের দুই দেশের অনেক অভিন্ন বিষয় রয়েছে এবং ‘এই প্রশাসনের সঙ্গে কোনো ঝামেলা হবে না’।

যুক্তরাষ্ট্র-বাহরাইনের সম্পর্কের প্রশংসা করে বাদশা বলেছেন, এটা এই অঞ্চলে ‘শান্তি ও সমৃদ্ধি’ আনতে ভূমিকা রেখেছে।

কুয়েতের আমির সাবাহ আল-আহমাদ আল-সাবাহর সঙ্গে বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুল পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম কেনার কথা উল্লেখ করেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পকে ‘নিজের ভাই’ বলেন কুয়েতি আমির।

নয় দিনের বিদেশ সফরে সৌদি আরব থেকে ইসরায়েল, ইতালি, বেলজিয়ামসহ কয়েকটি দেশ ঘুরবেন ট্রাম্প।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031