॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ স্বামীর পরকিয়া প্রেমের কথা জেনে যাওয়ায় স্বামীর দেয়া আগুনে মারা গেছে ৮ মাসের অন্তঃসন্তা টুম্পা। গতকাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আজ দুপুরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এই ঘটনায় টুম্পার শ্বশুর বাড়ী রাঙ্গামাটি মুসলিম পাড়ায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, রাঙ্গামাটি পৌর সভার মুসলিম পাড়া এলাকায় গত গত ১৯ মে রাতে স্বামীর সাথে কলহের জের ধরে স্ত্রীর গায়ে কেরসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ৮ মাসের অন্তঃসত্বা স্ত্রী টুম্পা কে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা চালায়। স্বামীর দেয়া আগুনে শরীরের ৬০ ভাগ পুড়ে যায়। পরে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় মুমুর্ষ অবস্থায় গভীর রাতে টুম্পাকে রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতাল হতে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ করে বলেন, টুম্পার স্বামী অভি আহেম্মেদই (পিতা- মৃত সিদ্দিক আহেম্মেদ সওদাগর) গভীর রাতে অভির পরকীয়া প্রেমের কারনে টুম্পার শরীরে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে পুড়ে টুম্পা এবং তার পেটের সন্তানকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল।
টুম্পার অবস্থান দিন দিন খারাপ হতে থাকলে তার ৮ মাসের বাচ্চাটি দু’দিন আগেই মৃত অবস্থায় জন্ম গ্রহণ করে। গতকাল পঞ্চম দিনে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে লড়তে না ফেরার দেশে চলে গেলেন টুম্পা।
এই বিষয়টি রাঙ্গামাটি কয়েকজন সচেতন মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইস বুকে তুলে ধরলে বিষয়টি নিয়ে রাঙ্গামাটিতে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। গতকাল এমন একজন সচেতন যোগাযোগ মাধ্যমের সচেতন মানুষ মোঃ আবু তৈয়বের দেয়া ছবি ও ভিডিও থেকে ছবি সংগ্রহ করে এবং খোঁজ খবর নিয়ে আমরা সংবাদটি প্রকাশ করেছি।
নিহত টুম্পার বড় ভাই মোঃ সালমান মল্লিক জানান, তারা দুইজন ভালোবেসে বিয়ে করেছে। তার জন্য আমরা পরিবরে একটু অমত ছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামী তাকে নির্যাতন করতো। যৌতুকের জন্য বিভিন্ন সময় তার গায়ে হাত তুলতো। এছাড়া সে দীর্ঘ ১ মাসেরও বেশী সময় ধরে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি। তার কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এতোদিন আমরা ভয়ে মামলা করিনি এবং চেয়েছিলাম তারা আমার বোনকে চিকিৎসা করাক। আমার বোনতো চলে গেলো তাই আমরা চাই এর একটি সুষ্ঠ বিচার হোক। আমরা আগামীকাল মামলার প্রস্তুতি নেবো।
এই ব্যাপারে রাঙ্গামাটি কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রশিদ জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি। কিন্তু কেউ এখনো থানায় কোন অভিযোগ করেনি। তবে আমরা শুনেছি লাশটি চট্টগ্রামে ময়নাতদন্ত শেষে রাঙ্গামাটিতে এনে দাফন সম্পন্ন করেছে। তবে নিহতের পরিবার যদি মামলা দায়ের করে আমরা সেই ভাবে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।