॥ মো. আবুল বশর নয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ি ॥ ঘুর্নিঝড় মোরা’র আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি দল। শুক্রবার (২ জুন) সকালে প্রতিনিধি দলটি জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, তুমব্রু ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর এবং চাকঢালা এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তাৎক্ষণিক ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন। সকাল ১০টায় ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদে ক্ষতিগ্রস্থ ‘পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। এ সময় ‘‘প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আখতারুজ্জামান ও সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ‘অসিম কুমার উকিল, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক, ‘পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, বান্দরবান জেলা আওয়ামলীগ সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী, পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, লক্ষী পদ দাশ, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস,এম সরওয়ার কামাল, থানা অফিসার ইনচার্জ এএইচএম তৌহিদ কবিরসহ আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতা এবং প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ত্রাণ বিতরণকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বান্দরবানবাসী বার বার কৃতজ্ঞতা জানিয়েও শেষ করা যাবেনা। কারণ শেখ হাসিনার সু নেতৃত্বের কারণে এ পর্যন্ত জেলায় যত উন্নয়ন হয়েছে সবই তাঁরই অবদান। আগামীতে শিক্ষা, যোগাযোগ সহ সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করা হবে। সরকার প্রধান শেখ হাসিনার কাছে সত্যিকারের দেশপ্রেম আছে বলেই আজ আমরা তারই আস্থায় রয়েছি। অতীতের ঘূর্ণিঝড় বন্যায় শেখ হাসিনা মানুষের খবর রেখেছেন। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তিনি শক্তিশালী কমিটি মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছেন। এ কমিটির পরামর্শক্রমে আগামীতে দূর্গত মানুষের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন- সরকারের একার পক্ষে সব কিছু সমাধান করা সম্ভব নয়। তাই সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন মানুষের কল্যানের কথা বিবেচনা করে দূর্গত মানুষের সেবায় এগিয়ে আসতে হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যআয়ের দেশে রূপান্তরের স্বপ্ন আজ বাস্তবায়নের পথে। আজ বাংলাদেশের মানুষকে সবাই চেনে জানে। বিদ্যুতে আমাদের ঘাটতি ছিল, সাড়ে তিন হাজার থেকে বর্তমানে প্রায় ১৩ হাজার বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। আজ দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বিদেশে খাদ্য রপ্তানী হচ্ছে, রির্জাভ বেড়েছে, আর এ বিদ্যুতের মাধ্যমে কৃষি উন্নয়ন হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও গাজীপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বলেন, আগাম প্রস্তুতি এবং আল্লাহর রহমতের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হতে কিছুটা রক্ষা পেয়েছি। তারপরও কিছু এলাকায় গাছপালা পড়ে ঘর বাড়ি, স্কুল-মাদরাসা ভেঙ্গেছে। পোল্টি শিল্প, পানের বরজ ও কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। এ খবর নেওয়ার জন্যই প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাঠিয়েছেন। দূর্যোগ মোকাবেলার জন্য তাৎক্ষণিক ত্রাণ বিতরণ, চিকিৎসার ব্যবস্থা, ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপনসহ তিন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পর্যাক্রয়ে ক্ষতিগ্রস্থ সকলকে সহযোগিতা করা হবে।
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল বলেছেন- ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের আর্তনাদের কথা শুনে প্রধানমন্ত্রী আমাদের মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছেন। সরকার দূর্গত মানুষের পাশে আছে এবং তাদের যথাযথ সেবা এবং সাহায্য সহযোগিতা করে যাবে।
এদিকে জেলা প্রশাসন সুত্রে জানাযায়, ঘর্নিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ মেঃ টন চাল ও ৯০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা ও আলীকদম উপজেলায় ৩০ মেঃটন চাল বিতরণ করা হয়।
প্রতিনিধি দলটি শনিবার রাঙ্গামাটি জেলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন বলে জানা গেছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরীর পরিচালনায় নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য ক্যউচিং চাক।