॥ মোঃ মোস্তফা কামাল ॥ দেশের সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদের কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র গুলোতে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন কৃত ডিম পাওয়া গেছে। লংগদু উপজেলার ফরেস্ট গার্ড সংলগ্ন কাচালং চ্যানেলে এই কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন কৃত ডিম সংগ্রহে সফলতা পেয়েছে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, রাঙ্গামাটি নদী উপকেন্দ্রের মৎস্য বিজ্ঞানীরা।মৎস্য বিজ্ঞাণীদের এই সফলতা কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশ বিস্তার সহ মাছের সার্বিক উৎপাদন বৃদ্ধিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন করেছে বলে সংশ্লিস্টদের অভিমত।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনষ্টিটিউট, রাঙ্গামাটি নদী উপকেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এম, এ, বাশার জানান কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের যে রকয়েকপিট প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র ছিল তার মধ্যে চেঙ্গী এবং রাইক্ষং চ্যানেলের প্রজনন ক্ষেত্র গুলো বর্তমানে সম্পূর্ণরুপে বিনষ্ট হয়ে গেছে। অপরাপর প্রজনন ক্ষেত্র গুলোর মধ্যে কাচালঙ এবং কর্ণফুলী চ্যানেলের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র গুলো পূনরুজ্জীবিত করার সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত এইসব প্রাকৃতিক প্রজণন ক্ষেত্র গুলো হুমকির মুখে থাকায় হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন মৌসুমে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন আশানুরুপ ভাবে না হওয়ায় হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের সার্বিক উৎপাদন ক্রমশ কমে আসছে। বিকল্প উপায় হিসাবে হ্রদে বিএফডিসির উদ্যোগে হ্রদে মাছ ধরা বন্ধ মৌসুমে কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হলেও তা প্রয়োজনের ত’লনায় কম বিধায় কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন এখনো শতকরা ২০ ভাগ পেরুতে পারছেনা। এই ক্ষেত্রে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করা গেলেই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন আশানুরুপ পর্যায়ে পৌছাতে পারবে।
মৎস্য গবেসণণা ইনষ্টিটিউটের এই ।ুর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজ নের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য গবেসণা কেন্দ্রের মৎস্য বিজ্ঞাণীরা দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়ে আসছেন। এর মধ্যে ১৯৮৬ সালে এবং ২০০২ ও ২০০৩ সালে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক মাছের প্রজনন ক্ষেত্রে মাছের প্রজনন কৃত ডিম পাওয়া গেলেও পরবতৃী বছর গুলোতে এই প্রজনন ক্ষেত্র হতে আর ডিম পাওয়া যায়নি । পরবর্তীতে গবেষণা কেন্দ্রের মৎস্য বিজ্ঞাণীরা কাচালং ও কর্ণফুলী চ্যানেল দুটিকে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন এর উপযোগী করার কাজ শুরু করে এবং অনুকুল পরিবশে সৃষ্ঠির কাজ করে। এরই প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১১ জুন এই দুটি চ্যানেল হতে প্রাকৃতিক প্রজনন কৃত কার্প মাছের ডিম পাওয়া যায়। বিষয়টি মৎস্য জ্ঞাণীদের মাঝে নতুন আশার আলো সৃষ্ঠি করে এবং ২০১৭ সালের ২রা এবং ৩ রা মে কাচালং চ্যানেল হতে প্রচুর পরিমানে কার্প জাতীয় মাছের ডিম পাওয়া যায়। তিনি জানান মাছ ধরা বন্ধ মৌসুমে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার মধ্য দিয়ে কাপ্তাই হ্রদ নিয়ে সকলের মধ্যে উচ্চাশার সৃষ্ঠি হবে। তিনি ভবিষ্যতে মাছ ধরা বন্ধ মৌসুমটি আরো দীর্ঘায়িত করা হলে এর সুফলতা অধিক হারে পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে কাচালং চ্যানেলে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন কৃত ডিম সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেসণা ইনস্টিটিউট, রাঙ্গাামাটি নদী উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী বেলাল উদ্দিন জানান এই পর্যন্ত উক্ত স্থান হতে ডিম সংগ্রহকারীদের সহযোগিতায় বিমেষ পদ্ধতিতে প্রচুর পরিমানে কার্প জাতয়ি মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। এটি হালদা নদীতে যে উপায়ে মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয় তদ্রুপ ভাবে করা হয়েছে।
তিনি জানান সংগ্রহকৃত কার্প জাতীয় মাছের ডিম সমূহ থেকে মাছের রেনু ও পোনা উৎপাদনের জন্য পরবতৃী পদক্ষেপ এবং গবেসণার কাজ করা হবে। সংগ্রহকৃত ডিম লংগদু উপজেলার মারিশ্যাচর হ্যাচারীতে রাখা হচ্ছে এবং সেখানে ডিম থেকে পোনা উৎপাদনের প্রাকৃতিক কাজ সম্পন্ন করা হবে।
কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতয়ি মাছের প্রাকৃতিক প্রজণন এর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার ফলে কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতয়ি মাছের ভবিষ্যৎ উৎপাদনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে সংশ্লিস্টদের অভিমত। মৎস্য বিজ্ঞাণীদের অভিমত কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন এর বিষয়টি এই হ্রদের জন্য নতুন সম্ভাবনার উম্মোচন করবে। কেননা প্রাকৃতিক ভাবে মা মাছেরা যে ডিম ছাড়ছে তাতে হ্রদে মাছের উৎপাদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। কার্প জাতীয় মাছের পাশাপাশি অন্যান্য প্রজাতির মাছ গুলোও এবছর কাপ্তাই হ্রদে প্রজনন মৌসুমে াণ্যান্য বছরের তুলনায় অধিকহারে ডিম ছাড়ছে বলে তাদের অভিম। উল্লেখ্য রুই, কাতলা, মৃগেল, কালি বাউশ, সাদা ঘনিয়া প্রজাতির মাছ গুলো কার্প জাতীয় মাছ হিসাবে পরিচিত। সুস্বাদু এই সব মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ।