॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় সহরের বেশ কয়েকটি সরকারি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাগুলো যে কোন মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। এই ভবন গুলো ধ্বসে পড়ে গেলে জেলার সরকারি সকল কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে এবং প্রাণহানিরও আশংকা রয়েছে। এছাড়া রাঙ্গামাটির অসংখ্য ব্যক্তি মালিকানাধীন বড়ো বড়ো বিল্ডিং ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকৌশল বিভাগ।
রাঙ্গামাটি গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরা বলছেন, গত ১২ জুন থেকে ভারী বর্ষণের ফলে ১৩ জুন পাহাড় ধসের ঘটনায় রাঙ্গামাটির সরকারি-বেসরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ঝুঁকিতে পড়েছে। এ তালিকায় রয়েছে সার্কিট হাউস ভবন, ডিসির বাংলো, পুলিশ সুপারের বাংলো, রাঙ্গামাটি টেলিভিশন উপকেন্দ্র, বাংলাদেশ বেতার ভবন, পার্সপোট অফিস, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির যাদু ঘর ও ছাত্রাবাস, জেলা সমাজ সেবা অফিস, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের কার্যালয়, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) ভবন)সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভবন।
ইতিমধ্যে রাঙ্গামাটি গণপূর্ত বিভাগ রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউজের পিছনে পাইলিং এর কাজ শুরু করেছে। আগামী দুই এক দিনের মধ্যে রাঙ্গামাটি সার্কিট হাউজের পাইলিং কাজ শেষ হলে কিছুটা ঝুঁকিমুক্ত হবে বলে এই ভবন।
রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মোতালেব সরকার সাংবাদিকদের বলেন, গত ১৩ জুন পাহাড় ধ্বসের পড়ে পাসপোর্ট অফিসে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছিলো। কিন্তু পাসপোর্ট ভবনটি কিছুটা ঝুঁকিতে রয়েছে তাই এখান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এবিষয়ে আমি প্রকল্প পরিচালককে অবগত করার পর সেটি সংস্কারের জন্য বরাদ্দও চলে এসেছে, আশা করি, বৃষ্টি কমে গেলে এর কাজ শুরু হবে।
মঙ্গলবারের দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই সেখানে আশ্রয়ও নিয়েছেন। এছাড়া শিমুলতলীস্থ জেলা পাসপোর্ট অফিসের তিনতলা ভবনও একই রকম ঝুঁকিতে রয়েছে। যে পাহাড়ে এটি রয়েছে তার পাশেই একাংশ মঙ্গলবারের দুর্যোগে খাড়াভাবে ধসে গেছে। এর মধ্যে ভেদভেদী এলাকার রাঙামাটি সার্কিট হাউজ, শিমুলতলী এলাকার রেডিও স্টেশন, একই এলাকার পাসপোর্ট অফিস বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।
সরকারি স্থাপনার মতো মানুষের ঘরবাড়ি, সড়ক, দোকানপাটও ঝুঁকিতে পড়েছে। রাঙ্গামাটি শহরের রাস্তাঘাটেও ভাঙন ধরেছে। বিভিন্ন সড়কের এক পাশে বালুর বস্তা ও লাল পতাকা দিয়ে বিপজ্জনক এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ বেতার রাঙামাটি কেন্দ্রের আঞ্চলিক প্রকৌশলী ভাস্কর দেওয়ান বলেন, চতুর্দিকে পাহাড় ধসে যাওয়ায় বেতার ভবন পুরোপুরি ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের তিনটি টাওয়ারও ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে। বেতার ভবনের প্রবেশ মুখের সড়কও ধসের ঝুঁকিতে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবনের পাম্প হাউজটিও ধসের মাটিতে তলিয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় বেতার ভবন স্থানান্তর করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
রাঙ্গামাটির সকল স্থাপনা পাহাড়ের উপর উল্লেখ করে রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মানজাররু মান্নান বলেন, গত মঙ্গলবারের ঘটনায় বেশ কয়েকটি সরকারি অফিস ও বাংলো ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। পাহাড় ধস ও অধিক বৃষ্টিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনো পর্যন্ত নিরুপণ করা হয়নি।