॥ কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই ॥ গত তিন দিনের ভারি টানা বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল এবং উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। লেকে পানি বেড়ে যাওয়ায় লেক তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। লেকের পাশে নিচু এলাকায় অবস্থিত শতশত কাঁচা ঘরবাড়ি এবং বিভিন্ন স্থাপনা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বর্তমানে কাপ্তাই এবং রাঙ্গামাটিতে যেহারে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে তা চলমান থাকলে রাঙ্গামাটিবাসীকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সুত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই লেকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৬ গেইট ৩ ফুট হারে খুলে দেওয়া হয়েছে। লেকের অতিরিক্ত পানি কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে কাপ্তাই উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, বোয়ালখালি ইত্যাদি উপজেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক শফি উদ্দিন আহমেদ লেকে পানি বৃদ্ধি পাবার কথা স্বীকার করে এই প্রতিনিধিকে বলেন, রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী লেকে ১২ আগষ্ট পানি থাকার কথা ৯৩.৫২ ফুট মীন সী লেভেল (এমএসএল) পানি। কিন্তু লেকে বর্তমানে পানি রয়েছে ১০৭.৭৮ ফুট এমএসএল পানি। রুলকার্ভের চেয়ে লেকে প্রায় ১৪ ফুট এমএসএল পানি বেশি রয়েছে বলে ব্যবস্থাপক জানান। তবে লেকে আরো বেশি পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। পানি বাড়লে স্পিল দিয়ে আরো বেশি পরিমানে পানি ছাড়া হবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে ভারি বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস বৃদ্ধি পেয়েছে। কাপ্তাই-ঘাঘড়া-রাঙ্গামাটি সড়কের বিভিন্ন স্থানে ধস নামায় যান বাহন চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। সড়কের উপর বিভিন্ন স্থানে ২ থেকে ৩ ফুট পারিমানে পাহাড়ি মাটি জমে আছে। আঠালো মাটির কারণেও রাস্তায় কোন ধরনের গাড়ি যথাযথভাবে চলাচল করতে পারছেনা। কাপ্তাই উপজেলার বরইছড়ি, শিলছড়ি, চিৎমরম, ব্যাংছড়ি, কাপ্তাই নতুন বাজার, ঢাকাইয়া কলোনী, কেপিএম টিলা ইত্যাদি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী শতশত পরিবার চরম সঙ্কটাপর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন মুহুর্তে পাহাড় ধস হলে বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবনহানীর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যাবার জন্য প্রশাসন থেকে বারবার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। তবে প্রশাসনের অনুরোধে এখন পর্যন্ত কেউ সাড়া দেয়নি বলে সুত্রে জানা গেছে।