স্প্যান বসিয়ে দৃশ্যমান করা হয়েছে পদ্মা সেতু

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শনিবার সকাল ৮টায় কাজ শুরু করে ১০টার মধ্যে ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যানটি বসানো হয়।

পরে সেতুর জাজিরা জেটিতে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই প্রথম স্প্যানটি সফলভাবে বসানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য স্প্যানগুলো উঠবে।

এখন পর্যন্ত এ সেতুর সাড়ে ৪৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

২০১৫ সালের ডিসেম্বর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর মূল কাজ শুরু হয়।

মন্ত্রী কাদের বলেন, “প্রথম স্প্যান বাসানোর মধ্য দিয়ে কালো মেঘ কেটে দৃশমান হয়েছে পদ্মা সেতু। সব বাধা উপেক্ষা করে সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। যথাসময়েই সেতুর কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে স্প্যান বসানো উদ্বোধন করবেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেতুর কাজ যাতে একমুহূর্তের জন্য বন্ধ না থাকে সেজন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে স্প্যান বসানো হয়েছে।

সেতু দৃশ্যমান হওয়ার পর ওই এলাকায় মানুষের মধ্যে আনন্দোচ্ছল পরিবেশ দেখা গেছে। স্প্যান বসানোর দৃশ্যটি দেখার জন্য অনেক মানুষ নৌকায় করে প্রকল্প এলাকায় আসে। তবে নিরাপত্তার কারণে সেনাসদস্যরা কাউকে কাছে আসতে দেয়নি। তারা দূর থেকেই দেখেছে।

স্প্যানটি এখনও ৩৬০০ টন ক্ষমতার একটি ক্রেনের সঙ্গে বাঁধা রয়েছে। নাট-বোল্ট দিয়ে আটকানোর কাজ শেষ হওয়ার পর ক্রেনটি সরানো হবে বলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন।

চীন থেকে আনার পর স্প্যানটি প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের ওয়ার্কসপ রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে রোববার স্প্যানটি নিয়ে রওনা হয় একটি ক্রেন। রাতে ২৩ নম্বর পিলারের কাছে যাত্রাবিরতি করে। সোমবার সকালে আবার রওনা হয়ে দুপুরে ৩০ ও ৩১ নম্বর পিলারের মাঝামাঝি নোঙ্গর করে। শুক্রবার দুপুর ২টায় নেওয়া হয় ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের মাঝামাঝি। সন্ধ্যার আগেই দুই পিলারের মাঝামাঝি ঝুলিয়ে রাখা হয়, আর শনিবার সকাল ৮টায় শুরু হয় বসানোর কাজ।

সেতুর প্রকল্প পরিচালক সফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, দুটি হ্যামার দিয়ে জাজিরা ও মাওয়া উভয় প্রান্তে পাইলিংয়ের করা জরা হচ্ছে। নভেম্বরের শেষ দিকে আরেকটি হ্যামার জার্মানি থেকে আসবে।

তিনি বলেন, সেতুর ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসবে। একটি স্প্যান বসানো হলেও মাওয়ার কুমারভোগে আরও ৯টি স্প্যান তৈরি রয়েছে, আর চীনে তৈরি আছে আরও ১২টি। এগুলে পর্যায়ক্রমে আনা হবে।

এছাড়া বাকি ১৯টি স্প্যান চীনে তৈরির প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।

এই স্প্যানের মাঝ বরাবর নিচের লেনে চলবে ট্রেন। ওপরে কংক্রিটের চার লেনে চলবে গাড়ি।

মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, সেতুসচিব আনোয়ারুল ইসলাম, সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম, জেনারেল আবু সাইদ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজের প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30