॥ মুহাম্মদ জুবাইর, টেকনাফ ॥ টেকনাফে এক ব্যক্তিকে অপহরণের অভিযোগে সাত ডিবি (গোয়েন্দা শাখা) পুলিশকে আটক করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তাদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে মুক্তিপণের নগদ ১৭ লাখ টাকা। টেকনাফ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামানের ছোট ভাই আবদুল গফুরকে আটক করে ওই টাকাগুলো মুক্তিপন হিসেবে আদায় করা হয় বলে জানা গেছে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) ভোর সাড়ে চারটার দিকে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কে তল্লাশি চৌকিতে ওই সাত ডিবি পুলিশকে আটক করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল। টেকনাফের হারিয়াখালী রোহিঙ্গা ত্রান কেন্দ্রে নিয়োজিত অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের কর্মকর্তা মেজর নাজিম আহমেদ বলেন, ডিবির একটি দল আবদুল গফুরকে মঙ্গলবার সকালে অপহরণ করে। এরপর মুক্তিপণ হিসেবে পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে তারা।
দর-কষাকষির পর তার পরিবার ১৭ লাখ টাকা দিতে সম্মত হয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে টাকা পরিশোধের পর ভোররাতে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ এলাকায় গফুরকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর ওই পরিবার বিষয়টি সেনাবাহিনীকে জানালে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ এলাকার লম্বরী সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে ডিবির মাইক্রোবাস গাড়িটি সংকেত দিয়ে থামান জওয়ানরা। এ সময় মনিরুজ্জামান নামের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও গাড়িটি তল্লাশি করে হলুদ রংয়ের কাপড়ের প্যাকেট থেকে মুক্তিপনের আদায় করা ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয় এবং অপর সাতজন ডিবি পুলিশকে আটক করা হয়। সেখান থেকে ভোররাতেই তাদের সাবরাং সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। পরে উদ্ধার হওয়া টাকা গুলো আব্দুল গফুরের ভাই টেকনাফ পৌর সভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার মনিরুজ্জামানকে হস্তান্তর করেন। এদিক আটক সাত গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যদের জেলা পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল হোসেনের বরাবরে সোর্পদ করা হয়েছে।
টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামান বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজারের আয়কর অফিসের সামনের সড়ক থেকে তার ভাই আবদুল গফুরকে ডিবি পরিচয় দিয়ে আটক করা হয়। পরে তাকে মুক্তিপন হিসেবে ৫০ লাখ টাকা দাবী করলে ১৭ লাখ টাকা দেয়ার পর গফুরকে ছেড়ে দেয় ডিবি পুলিশ। বিষয়টি জানিয়ে সেনাবাহিনীর কাছে সহযোগিতা চাওয়া হলে ডিবি পুলিশের দলটি টেকনাফ থেকে কক্সবাজার ছেড়ে যাওয়ার পথে সেনাবাহিনীর ওই তল্লাশী চৌকিতে তাঁদের আটক করা হয়।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফ পৌরসভার মধ্য জালিয়া পাড়ার মৃত আমির হোসেনের পুত্র আবদুল গফুর, তার ভাই জাফর আলম ওরফে টি টি জাফর ও তার ভাই কাউন্সিলর মনিরুজ্জমান ওরফে লেডু মাদকদ্র্রব্য অধিদপ্তরের ৭৬৪ জনের তালিকায় তাদের নাম রয়েছে।