আজ পার্বত্য চুক্তির দু’দশক পূর্তি, চুক্তি স্বাক্ষরকারী দুইপক্ষের মধ্যে চলছে টানাপোড়েন

॥ মিল্টন বাহাদুর ॥ আজ ২রা ডিসেম্বর, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২০ বছর পূর্তি। বহুল আলোচিত এ চুক্তির দু দশক পূর্তিতে পাহাড়ে চলছে নানান কর্মসুচি। চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে জন সংহতি সমিতি হতাশা দেখালেও সরকারের দাবী চুক্তির বেশিরভাগই ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে। চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে গত দু দশক ধরে চুক্তি স্বাক্ষরকারী দুই পক্ষের মধ্যে চলছে টানাপোড়েন।
তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য আজ ঐতিহাসিক দিন। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর এই দিনে পাহাড়ে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির অবসান ঘটানোর জন্য তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার এবং জনসংহতি সমিতির সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। আর বাংলাদেশের ইতিহাসে এ চুক্তি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বা শান্তিচুক্তি নামে খ্যাত। এ চুক্তির মধ্য দিয়ে শান্তিবাহিনীর সদস্যদের প্রথম গ্রুপ খাগড়াছড়ি ষ্টেডিয়ামে এবং দ্বিতীয় গ্রুপ রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। এর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিবদমান দুই দশকের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান হয় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের দ্বার উম্মোচিত হয়। যার প্রক্রিয়া এখনো চলমান।
তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সরকার ও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে রয়েছে মতভেদ। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার বলছে চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আন্তরিক। আর চুক্তির বেশীর ভাগ ধারায় বাস্তবায়িত হয়েছে। চুক্তির যেসব বাস্তবায়ন হয়নি সেইসব বাস্তবায়ন করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আর যেসব বিষয়গুলো সমস্যা রয়েছে সেইসব বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ আলোচনায় মাধ্যমে চুক্তির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করা হবে।
আর এই চুক্তির পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় জনসংহতি সমিতির সভাপতি ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার রয়েছে ক্ষোভ। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে জনসংহতি সমিতি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেও সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক নয়। জনসংহতি সমিতির মতে চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ বিষয়ই অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়ে গেছে। এতে করে পার্বত্য চট্টগ্রামের সামগ্রিক পরিস্থিতি উদ্বেগজনক ও অত্যন্ত নাজুক হয়ে উঠছে।
এদিকে চুক্তির দুইদর্শক পূর্তিতে রাঙ্গামাটিতে সরকারী ভাবে পালন করা হচ্ছে নানা আয়োজন। ১ ডিসেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটি মারি ষ্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত রয়েছেন।
আর ২ ডিসেম্বর শনিবার সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২০ বছর পূর্তিতে কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণে আয়োজন করছে গণ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল। ২৯৯ রাঙ্গামাটি আসনের সংসদ সদস্য ও জনসংহতি সমিতির সহ-সভাপতি ও উষাতন তালুকদার ও জনসংহতি সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি সুবর্ণ চাকমাসহ জনসংহতির নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।
জনসংহতির সমিতির মতে, দীর্ঘ সময় গতিহীন থাকায় সরকারী উদ্যোগগুলোর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে পাহাড়ীরা। চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি বর্তমান সরকারের আমলে একের পর এক কেবল প্রতিশ্রুতি প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২০তম বর্ষপূর্তি পালন হচ্ছে পার্বত্য এলাকায়।

রাঙ্গামাটিতে আলহাজ্ব এ কে এম মকছুদ আহমেদের সাংবাদিকতায় ৫৫ বছর পূর্তিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান : একজন গুণি ব্যক্তিকে যথাযথ সম্মাননা জানানো সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য —মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান সবার দোয়া আর আল্লাহর অশেষ রহমত না হলে ৫৫ বছর পুরণ করতে পারতাম না—এ কে এম মকছুদ আহমেদ

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031