মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর পুলিশের এক ‘বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে’ বলা হয়, ৮ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগরে সব ধরনের ছড়ি বা লাঠি, ছুরি, চাকু বা ধারালো অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ বহন নিষিদ্ধ থাকবে।
যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং রাস্তায় দাঁড়িয়ে/বসে কোনো ধরনের মিছিল করা যাবে না।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করবে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। তাতে দোষী সাব্যস্ত হলে খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন সাজা হতে পারে।
বিএনপির অভিযোগ, সরকার বিএনপি নেত্রীকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই ‘মিথ্যা’ এই মামলাকে রায় পর্যন্ত টেনে এনেছে। রায় বিপক্ষে গেলে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারিও তারা দিয়ে রেখেছে।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বলে আসছেন, খালেদা নির্দোষ হয়ে থাকলে আদালতেই তার প্রমাণ হবে।
বিএনপি-জামায়াত যাতে কোনো ‘অরাজকতা করতে না পারে’, সেজন্য সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের রায়ের দিন মাঠে নামানোরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে।
এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে এই রায় ঘিরে দুই প্রধান দলের নেতাদের কথার লড়াইয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তৈরি হয় সাধারণ মানুষের মনেও। এই প্রেক্ষাপটে কড়াকড়ি আরোপ করে মঙ্গলবার পুলিশের বিজ্ঞপ্তি এল।
সেখানে বলা হয়, “আগামী ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ বৃহস্পতিবার বিচারাধীন একটি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীতে কোন কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কর্তৃক অরাজকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপপ্রয়াস হতে পারে মর্মে বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য, ইলেকট্র্রনিক, প্রিন্ট ও সোশাল মিডিয়ার সূত্রে জানা যায়।”
শান্তি-শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য ওই বিজ্ঞপ্তিতে সবার সহযোগিতাও চেয়েছেন ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
পুলিশের প্রস্তুতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশ ‘সব কিছুই’ করবে।
“৮ ফেব্রুয়ারি রায়কে কেন্দ্র করে যে কোনো ধরনের নাশকতা রোধে পুলিশের সকল ইউনিটকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
এদিকে পুলিশ মহা পরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকার জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাদের ৮ ফেব্রুয়ারির পরিস্থিতি নিয়ে নির্দেশনা দেন। র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিশেষ স্থাপনা ছাড়াও পুলিশের সব ধরনের চেকপোস্টে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
“যানবাহনে নিয়মিত যে তল্লাশি করা হয়, রায় ঘিরে তা বাড়ানো হচ্ছে। সার্বিক বিষয়গুলো নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।”
বিএনপি অভিযোগ করেছে, গত ২৮ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির ১১ শ নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সহেলী ফেরদৌস বলেন, “প্রতিদিনই বিভিন্ন অভিযোগে শত শত ব্যক্তি গ্রেপ্তার হচ্ছে। এর মধ্যে সন্ত্রাসের অভিযোগ ছাড়াও চুরি, ডাকাতি, অপহরণ মামলার আসামি রয়েছে। পৃথকভাবে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের তালিকা তৈরি করা হয়নি।”