পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠিত হয়েছে এবং বিভাগগুলো হস্তান্তরিত হয়েছে। তাই চুক্তির নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের সেভাবে কাজ করে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।
রবিবার (১৮ফেব্রুয়ারি) সকালে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভাকক্ষে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভা সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ নীহার রঞ্জন নন্দী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী অসিউর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কৃষি প্রকৌশলী দেবাশীষ চাকমা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (সাময়িক দায়িত্ব) মনছুর আলী চৌধুরী, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা, জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মনোরঞ্জন ধর, বিসিক-কুটির শিল্প উন্নয়ন কর্মসূচীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক স্বপন কুমার ত্রিপুরাসহ রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য এবং হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা চুক্তির নির্দেশনা মোতাবেক পরিষদে হস্তান্তরিত বিভাগ প্রধানদের কাজ করার পরামর্শ দিয়ে আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা যদি দাপ্তরিক কাজে দক্ষ হয় জেলা তথা দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। যতদিন দায়িত্বে থাকবেন ততদিন নিষ্ঠার সাথে সবাইকে দক্ষতার সাথে কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, সরকার আমাদের নিয়োগ দিয়েছেন জনগণের কল্যাণের স্বার্থে। পরিষদের হস্তান্তরিত বিভাগের সকল কর্মকর্তাদের সততার সাথে জনকল্যাণে স্ব স্ব দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। জনগণের উন্নয়নের স্বার্থে পরিষদের সকল কার্যক্রমে সবসময় সকলের সহযোগিতা কামনা করেন চেয়ারম্যান।
সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ নীহার রঞ্জন নন্দী বলেন, জেনারেল হাসপাতাল ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জায়গা দখলের বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে এবং যোগাযোগ অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, জেলার জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, রাজস্থলী, কাউখালী ও কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০শয্যায় উন্নতিকরণের কাজ চলছে।
সভায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী অসিউর রহমান জানান, পানি সাপ্লাই ও লিকেজের মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমেই টিউবওয়েল ও রিংওয়েল স্থাপনার কাজ সম্পন্ন করা হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কৃষি প্রকৌশলী দেবাশীষ চাকমা জানান, ২০১৭-১৮ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বোরো রবি ফসল আবাদ ২৩০ হেক্টর জমিতে হয়েছে। এছাড়া চাষী পর্যায়ে উন্নত মানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় বোরো আবাদের প্রদর্শনী চলছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (সাময়িক দায়িত্ব) মনছুর আলী চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের তাদের স্ব স্ব ভাষায় পাঠদানের জন্য প্রায় ৩শতাধিক শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এছাড়া জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের শুন্যপদ পূরণের লক্ষে প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র গ্রহণ শেষে বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, জেলা-উপজেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে চলছে। তিনি বলেন, রেজিষ্ট্রেশন ও নিয়ন্ত্রহীনভাবে জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যক্তি উদ্যোগে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। যার ফলে অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীরা শিক্ষা পাচ্ছেনা এবং শিক্ষা অফিস থেকে বিদ্যালয়গুলোতে বই প্রদানে সমস্যা হচ্ছে।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মনোরঞ্জন ধর বলেন, বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট থেকে এ জেলার কেল্ল্যামুড়া এলাকা থেকে একজন সেরা উদ্যোক্তা নির্বাচিত হয়েছেন, যেটি আমাদের জেলার জন্য একটি গর্বের বিষয়। এছাড়া দপ্তরে চিকিৎসা ও উৎপাদন কার্যক্রম যথারীতি চলছে।
বিসিক-কুটির শিল্প উন্নয়ন কর্মসূচীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক স্বপন কুমার ত্রিপুরা জানান, কুটিরশিল্প উন্নয়ন কর্মসূচির মধ্যে বস্ত্র বুনন, পোশাক সেলাই, বাঁশ বেতের পণ্য তৈরী, বাটিক বুটিক, কম্পিউটার, প্লাষ্টিক ব্যাগ তৈরী’সহ বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ চলছে। যা এ অর্থ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।
হর্টিকালচার সেন্টার বালুখালী, বনরুপা, লংগদু, নানিয়ারচর, আসামবস্তী ও কাপ্তাইয়ের উদ্দ্যান তত্ববিদরা জানান, বর্তমানে নার্সারিতে টার্গেট অনুযায়ী চারাকলম উৎপাদন ও বিক্রয় কার্যক্রম চলছে।
