রাঙ্গামাটিতে লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের রজত জয়ন্তী উৎসব শুরু

বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাঙ্গামাটির অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ২৫ বছর পূর্তিতে প্রাক্তন ছাত্রÑছাত্রীদের পূর্ণ মিলনী ও দুই দিনের রজত জয়ন্তী উৎসব শুরু হয়েছে।
সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার প্রধান অতিথি হিসেবে বুধবার সকালে লেকাস স্কুল প্রাঙ্গণে রজত জয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করেন।
এর আগে শহরে এক বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার আনন্দ শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে স্কুল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
পরে স্কুলের মিলনায়তনে রজত জয়ন্ত্রীর উৎসবের আলোচনা সভায় এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির প্রধান অতিথি ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী তালুকদার গেষ্ট অব অনার এর বক্তব্য দেন। এ ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মানজারুল মান্নান, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চায্য ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, পুলিশ সুপার সাঈদ তারিকুল হাসান, রাজ পরিবারের সদস্য কুমার নন্দিত রায়, রাঙ্গামাটি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফারুক ও লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজনিন নাহার বক্তব্য দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেনাবাহিনীর এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার বলেন, রাঙ্গামাটি লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ এই অঞ্চলের একটি শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। এটা একটা স্বপ্ন দেখানোর জায়গা এবং তা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। তিনি বলেন, যেখানে একি সাথে একি প্লাটফর্মে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ছেলে মেয়েরা লেখা পড়া করছে। সম্প্রীতির সাথে তারা শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে। এই উদাহরণ পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়া উচিত এবং তা সকলের চাওয়া বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি লেকার্সে প্রত্যেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তারা এই অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। এই উদাহরণ বাংলাদেশের জন্য প্রশংসার দাবীদার।
জিওসি বলেন, ২৫ বছর সময় একটি বিদ্যাপীঠের জন্য খুব বড় এটা সময় নয়। একটা বিদ্যাপীঠ গড়ে তুলতে অনেকের শ্রম নিষ্ঠা এবং দীর্ঘদিন সময় লাগে। ২৫ বছরে রাঙ্গামাটির এই বিদ্যাপীঠ যে পথ অতিক্রম করে এসেছে তা খুব সহজ ছিল না। এই পথ চলাটা ছিল অনেক কষ্টের। তার পরেও এই বিদ্যাপীঠটি যে পর্যায়ে এসেছে তা রাঙ্গামাটিরবাসীর অবদান। সবার ঐক্লান্তিক চেষ্টায় ও ভালবাসায় এই বিদ্যাপীঠ আরো অনেক দুরে এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, এই বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠায় যাদের অবদান ছিল তাদের অবশ্যই স্বরণ করা হবে। বিদ্যালয়ের রজত জয়ন্তীতে লেকার্সের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মেজর জেনারেল আহসান নাজমুল আমিন এর নামে শিক্ষা বৃত্তি চালুর ঘোষনা দেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রথমে ভাল ভাবে শিক্ষা গ্রহন করতে হবে। শিক্ষা অর্থ বিশাল ও ব্যাপক। মনে রাখতে হবে, পুথিগত বিদ্যা অর্জনের পাশাপাশি চরিত্র গঠনের মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। চরিত্র গঠনের বিশাল অনুসঙ্গ হচ্ছে শিক্ষা। যে শিক্ষিত তিনি যদি চরিত্রবান না হন তাকে দিয়ে অনেক খারাপ কাজ করার আশংকা থাকে। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য হতে হবে শিক্ষার পাশাপাশি চরিত্র গঠন করা এবং সমাজে ভালভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, লেকার্সে পড়ালেখা করে ইতিমধ্যে যারা বেড়িয়ে গেছে তারা সমাজে ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ভাল কাজ করছে। আজ যারা শিক্ষার্থী তাদের দিকে সকলে তাকিয়ে আছে তারা বড় হয়ে দেশ ও জাতির মানসম্মান দেশে ও পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে দেবে। সকলেই আকাশের নক্ষত্র হয়ে জ্বলবে এবং মানুষের মত মানুষ হয়ে প্রমাণ করে দেবে বাংলাদেশের মানুষ সবাইকে ভালবাসে, বাংলাশের মানুষ চরিত্রবান, বাংলাদেশের মানুষ শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে মানবতার কল্যাণে ভাল কাজ করছে এবং ভাল কাজ করে যাবে।
রজত জয়ন্ত্রী উৎসবের গেষ্ট অব অনার সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেন, লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ আজ রাঙ্গামাটিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে প্রথম সারিতে এগিয়ে রয়েছে। অথচ এই স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় অনেকেই সমালোচনা করেছিল। আজ এই স্কুলের সাফল্য সেইসব সমালোচকদের মুখে ছাই দিয়েছে। তিনি লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করে বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের ঐক্লান্তিক প্রচেষ্ঠায় এই বিদ্যালয় আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে।
সভাপতির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফারুক বলেন, রাঙ্গামাটি লেকার্স পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের যে সুনাম অর্জন করেছে তার অবদান এই অঞ্চলের মানুষের। লেকার্স স্কুল এন্ড কলেজ আজ রাঙ্গামাটির মধ্যে একটি অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তিনি ঘোষণা দিয়ে বলেন, রাঙ্গামাটিতে অচিরেই আলাদা করে ক্যান্টেনম্যান্ট পাকলিক স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে। ইতিমধ্যে এই কাজের অনেক দুর এগিয়ে গিয়েছে বাকি কাজ শেষ হলে রাঙ্গামাটিতে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। তিনি লেকার্স স্কুল এন্ড কলেজের রজত জয়ন্তী উৎসবে আগত প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের ঐক্লান্তিক প্রয়াসে এই বিদ্যাপীঠ আরো এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পরে জিওসি লেকার্স স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মরহুম মেজর জেনারেল আহসান নাজুমল আমিনের স্বরণে শিক্ষা বৃত্তির উদ্বোধন করেন এবং স্কুলের মেধাবী ১৫জন শিক্ষার্থীর হাতে শিক্ষা বৃত্তি বিতরণ করেন।
দুই দিন ব্যাপী রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠান মালায় রয়েছে স্কুলের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষা সম্মাননা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

রাঙ্গামাটিতে আলহাজ্ব এ কে এম মকছুদ আহমেদের সাংবাদিকতায় ৫৫ বছর পূর্তিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান : একজন গুণি ব্যক্তিকে যথাযথ সম্মাননা জানানো সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য —মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান সবার দোয়া আর আল্লাহর অশেষ রহমত না হলে ৫৫ বছর পুরণ করতে পারতাম না—এ কে এম মকছুদ আহমেদ

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728