— মোহাম্মদ সাইদুল হক —
প্রিয়নবী (দঃ)’র সমস্ত মু’জিজার মধ্যে উর্ধ্ববগমন তথা মি’রাজ একটি বিস্ময়কর মু’জিজা। স্বশরীরে মি’রাজের ঘটনা বর্তমান আহলে হাদীস (ভ্রান্ত দল) বিশ্বাস করে না।তারা বিভিন্ন চ্যানেলে বসে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে… যা কুরআন-হাদীসের অপব্যাখ্যা। তাদের ফিতনা থেকে আপামর মুসলমাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
মি’রাজের ঘটনাটা খুবই আশ্চর্যের।স্বয়ং আল্লাহ মি’রাজের আয়াতে “ছুবহানাল্লাহ ” শব্দ দিয়ে শুরু করেছেন।যা আশ্চর্য ঘটনার ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয়ে থাকে।রাসূল (দঃ) যে স্বশরীরে মি’রাজ করেছেন তার প্রমাণ কুরআনেই বিদ্যমান। সুরা বনী ইসরাইলের প্রথম আয়াতে ” বিয়াবদিহী” তারই প্রমাণ বহন করে।কেননা,’আবদুন’ শব্দটি দ্বারা রুহ ও দেহের সমষ্টিকে বুঝানো হয়েছে।আবার,বোরাক প্রেরণ ও বোরাক কতৃক প্রিয়নবী (দঃ) কে বহন করে নিয়ে যাওয়ার মধ্যেও স্বসরীরে মি’রাজ গমনের প্রমাণ পাওয়া যায়।তবে— স্বপ্নে বা রুহানি ভাবে মি’রাজের দাবী করা হলে কুরাইশদের মধ্যে এত হৈ চৈ হতো না।আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের সকল ইমামগণই স্বশরীরে মি’রাজ গমনের কথা স্বীকার করেছেন।
মি’রাজের ঘটনাটি রাসুলের (দঃ) জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে,এর সাথে গতির সম্পর্ক, সময় ও স্থান সঙ্কোচনের তত্ত্ব জড়িত।সূর্যের আলোর গতি সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল।পৃথিবীতে সূর্যের আলো পৌছতে সময় লাগে আট মিনিট ২০ সেকেন্ড। এ হিসেবে পৃথিবী হতে সূর্যের দূরত্ব — নয় কোটি ত্রিশ লক্ষ মাইল।অথচ প্রিয়নবী (দঃ) মূহুর্তের মধ্যে চন্দ্র-সূর্য, সিদরাতুল মুনতাহা, আরশ- কুরছি ভ্রমন করে লা- মাকানে আল্লাহর দীদার লাভ করে নব্বই হাজার কালাম করে পুনরাই মক্কায় ফিরে আসেন।এসে দেখেন,বিছানা এখনও গরম রয়েছে।এর চেয়ে আশ্চর্য আর কি হতে পারে? নূর নবী (দঃ) এর নূরের গতি ছিল— এ থেকেই অনুমান করা যায়।কেননা,তিনি ছিলেন নূর।যাওয়ার সময় বোরাক ছিল, কিন্তু ফেরার সময় বোরাক ছিল না (রুহুল বয়ান) ।
রাসুলে করিম (দ:)‘র মিরাজে গমনে এটাই প্রমাণিত হয় যে রসুল (দ:) সাধারণ মানুষ নন। তিনি অতুলনীয়। আল্লাহর সৃষ্ঠির মধ্যে তিনিই শ্রেষ্ঠ। হযরত আব্দুর রহমান জামি (রহ:) রসুলের (দ:) উপমা দিতে গিয়ে বলেন, একটা পাখিকে ভাষা শিখাতে হলে পাখির সামনে একটা আয়না রাখ । আয়নার পেছন থেকে এবার কথা বলো। পাখি মনে করবে যে, আয়নার ভিতরের পাখিটা তার সাথে কথা বলছে। এভাবেই একটি পাখি মানুষের ভাষা শিখে । তদ্রুপ, রসুল(দ:) কে মানুষের আকৃতিতে পাঠানো হয়েছে মানুষদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য। যাতে ভয় পেয়ে দূরে চলে না যায়।
রসুলের মেরাজের শিক্ষা আমদের প্রত্যেককে গ্রহন করে এবং রসুল (দ:) মিরাজ থেকে যে সমস্ত নিয়ামতরাজী নিয়ে এসেছেন তা আমল করার তৌফিক দান করূন। আমিন, বিহুরমাতি ছায়্যিদিল মুরছালিন।
সহকারি শিক্ষক
পোয়াপাড়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
কাউখালী, রাঙ্গামাটি ।