খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: প্রশাসনের কাছ থেকে কোনরুপ পূর্বানুমতি ছাড়াই সাধারণ উপজাতীদের আড়ালে থেকে জেলার রামগড়ের সোনাই আগার পর গুইমারার কুকিছড়ার এবং এবার মহালছড়ির মাইসছড়ি ইউপির নুনছড়িস্থ দেবতাপুকুর এলাকায় আরো একটি পরিত্যক্ত সেনাক্যাম্পের সরকারী খাস ভূমি দখল করে মন্দির নির্মান করেছে পাহাড়ের একটি আঞ্চলিক সশস্ত্র একটি সংগঠন।কয়েকশত গজের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত আরেকটি মন্দির থাকলেও এভাবে রহস্যজনক কারণে ধর্মীয় উপাসনালয়ের নামে সরকারী খাস ভূমিটি দখল করে নেয়াটাকে স্থানীয়রা ইতিবাচক হিসেবে নিতে পারেন নি।তাদের দাবি, এভাবে কোন ধরণের অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে ভূমি দখল করে মন্দির নির্মান করে এক শ্রেণীর দূষ্কিতিকারীরা পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের পায়তারা করছে। তাছাড়া আশে-পাশে আরো ছোটবড় অনেকগুলো পাহাড় এবং সমতল ভূমি থাকলেও পরিকল্পিত ভাবেই পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের ভূমিটি দখল করেছে সন্ত্রাসীরা এমনটাই দাবি স্থানীয় উপজাতীয় গ্রামবাসীর।মন্দিরটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে খাস ভূমিটি অবমুক্ত করতে ইতিমধ্যেই নিকটস্থ মহালছড়ি জোন হতে নগদ সহায়তাও গ্রহন করেছে মন্দির পরিচালনা কমিটি, তবে একটা মহল এক্ষেত্রেও সাধারণ উপজাতীয়দের মন্দির সরাতে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বলছে, “মন্দির সরাতে যে আসবে, তার লাশ পড়বে” । আর ভয়ে তাই এখন মন্দির অন্যত্র সরানোর চেয়ে নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় পাহাড়ীরা। এর মধ্য কেউ কেউ আবার এলাকার ছাড়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন।তবে সবচেয়ে আশ্চর্য্যকর বিষয় হলো, নির্মিত লক্ষী নারায়ন মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বিনাচাঁন ত্রিপুরা নিজেই জানেন না তিনি মন্দিরের কোন পদে আছেন, নির্মিত মন্দিরটির স্থানে পূর্বে সেনা ক্যাম্প ছিলো স্বীকার করে প্রতিবেদকের কাছে তিনি জানান, মন্দিরটি নিয়ে বিভিন্ন অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের পর আমি জানতে পারলাম যে আমাকে মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক বানানো হয়েছে।স্থানীয় থলিপাড়া গ্রামের কার্বারী (৩৬) কুঞ্জ কার্বারী জানান, এখানে আগে একটি সেনা ক্যাম্প ছিলো, নিকটেই আরেকটি মন্দির থাকা স্বত্বেও কে বা কাহারা এখানে আরেকটি মন্দির নির্মান করলো তা আমার বোদগম্য নয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ত্রিপুরা যুবক জানান, এই পাহাড়ের উপর থেকে গুইমারা উপজেলা, সদও উপজেলা ও মহালছড়ি উপজেলায় বাহির থেকে একটি সিএনজি প্রবেশ করলেও তা সহজে খালি চোখে দেখা যায় এবং এ স্থানটিতে স্থানীয় একটি সশস্ত্র সংগঠন তাদেও পেট্রোলিং এর কাজে ব্যবহার কওে তাই তারা কোন ভাবেই এমন একটি স্থান হাতছাড়া করতে নারাজ। আর তাই সাধারণ উপজাতীয়রা সরাতে চাইলেও সন্ত্রাসীরা তাদের অস্ত্রের জোরে মন্দিরটি সরাতে দিচ্ছেনা।স্থানীয় সত্তোরর্ধ তেজেন্দ্র রোয়াজা জানান, এখানে আগে একটি সেনা ক্যাম্প ছিলো এবং প্রথম ক্যাম্প কমান্ডারের সাথে আমার খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল, প্রায়ই আমি ক্যাম্পে আসতাম, বর্তমানে একটি আঞ্চলিক দলের ছত্রছায়ায় এলাকার কিছু উশৃঙ্খল যুবক এস্থানটিকে তাদেও আখড়া হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, দেবতাপুকুর থেকে অনেক দূরে টিলার উপরে এবং কোন ধরণের রাস্তাঘাট না থাকায় এখানে নিয়মিত নজরদারি করা যাচ্ছেনা এবং কখনো পেট্রোল আসলেও তারা টিলার ওপর থেকে তা সহজেই দেখতে পাচ্ছে।তবে স্থানীয় তানাই ত্রিপুরা, নয়ন ত্রিপুরা, অলোকা ত্রিপুরাসহ স্থানীয়দেও দাবি, খাগড়াছড়ির অন্যতম পর্যটন স্পট দেবতাপুকুওে আসা পর্যটকদেও নিরাপত্তা ও সাধারণ উপজাতীয়দের নিরাপত্তায় এখানে আবারো একটি নিরাপত্তাক্যাম্প স্থাপন করা হোক