সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হয়ে উন্নয়ন বেগবান হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
যুবলীগের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সকালে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা গণভবনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানাতে এলে তিনি একথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, “নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমি আশা করব, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনে আসবে। কারণ একটা রাজনৈতিক দল নির্বাচনে না এলে সেই দল শক্তিশালী হয় না। সেটাই আমরা আশা করি, সব দল আসবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরো শক্তিশালী হবে।”
দেশের উন্নয়ন ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে আগামী নির্বাচন ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “এই নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের যে উন্নয়নের ধারাটা সূচিত হয়েছে, আমরা মেগা প্রকল্পগুলো নিয়েছি, দারিদ্র্য বিমোচনের যে অঙ্গীকার করেছি।
“দারিদ্র্য ৪০ ভাগ থেকে ২১ ভাগে নামিয়ে এনেছি। আরেকটাবার ক্ষমতায় আসতে পারলে আরও ৪ থেকে ৫ ভাগ কমাতে পারব। তাহলে বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা করতে পারব।”
“আমরা না থাকলে কেউ করবে না।”
আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, “যুব সমাজকে একটা বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। আজকে যুব সমাজের জন্য যে কাজগুলো করে দিয়ে গেলাম সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তাদের জীবনটা যেন সম্মানজনক হয়, উন্নত হয়, সম্মানজনক হয়।”
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে স্বাধীনতাবিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ক্ষমতায় বসানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন মুষ্ঠিমেয় কিছু মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছিল।
যুবসমাজের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, “যদি ত্যাগের মনোভাব থাকে তাহলে সফল হতে পারবে। যারা রাজনীতি করবে তাদের বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নিতে হবে। কী পেলাম কী পেলাম না সেই হিসাব করবেন না, হিসাব করবেন কতটুকু জনগণকে দিলাম, দিতে পারলাম।”
নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত দেওয়ার চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এই সেতু নির্মাণ নিয়ে নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংক ‘দুর্নীতি’ খোঁজার চেষ্টা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই তদন্ত করতে গিয়ে কিছুই পায়নি।
“এমনকি বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকার সময় বারবার আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তদন্ত করা শুরু করে। সেই তদন্ত করতে গিয়েও তারা কিছুই পায়নি।
“আমাদের পরিবার ও আমার বিরুদ্ধে একটাও দুর্নীতির বা কোনো কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন খাওয়া কিছুই পায়নি। আমার সম্পদ দেশের মানুষ।”
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় সাজা এবং তার ছেলেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “লোভকে জয় করা আর ভয়কে জয় করা, এটা যে করতে পারবে সেই পারবে দেশ ও জাতির সেবা করতে। আর সম্পদের পাহাড় গড়লে ওই সম্পদই থাকবে। মরতে তো একদিন হবেই। কিন্তু দেশকে কিছু দিয়ে দেওয়া যাবে না।
“ভোগে স্বার্থকতা নেই, ত্যাগেই স্বার্থকতা।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশকে আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মুক্ত করব। তরুণ সমাজ কীভাবে গড়ে উঠবে তার পরিকল্পনা আমরা দিয়েছি।”
এ সময় তিনি রূপকল্প ২০৪১ ও ২১০০ এর কথাও তুলে ধরে বলেন, “সেই বাংলাদেশ হবে বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছেন।”
অনুষ্ঠানের শুরুতেই যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক তার বক্তৃতায় শেখ হাসিনার সরকারের সময় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন এবং যুবলীগের পক্ষ থেকে নেওয়া নানা কাজের কথাও উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারুক হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি, দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, উত্তরের সভাপতি মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ।