চট্টগ্রাম ব্যুরো : সোমবার দুপুরে নগরীর কে সি দে রোডে নিজের নির্বাচনী কার্যালয়ে সর্বধর্মীয় প্রার্থনা সভায় এ আহ্বান জানান মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আমাদের গঠনতন্ত্রে এবং সংবিধানে আছে আমরা একই রাষ্ট্রের সমান অধিকারপ্রাপ্ত নাগরিক। রাষ্ট্রের চোখে এবং আইনের চোখে আমরা সকলেই সমান।
“জননেত্রী শেখ হাসিনা সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার করে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন এবং এই অঙ্গীকারগুলো যেন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি সৃষ্টিকর্তার কাছে এই প্রার্থনা করি।”
রোববার অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পুত্র নওফেল দুই লাখ ২৩ হাজার ৬১৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন পেয়েছেন ১৭ হাজার ৬৪২ ভোট।
সর্বধর্মীয় প্রার্থনা সভা আয়োজনের কারণ ব্যাখ্যায় নওফেল বলেন, দেশে যেন আগামী পাঁচ বছর জননেত্রীর নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি বজায় থাকে এ উদ্দেশ্যেই প্রার্থনা।
দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “এ বিশাল বিজয় দায়িত্বপূর্ণ বিজয়। আমরা কোনো উচ্ছ্বাস করব না, কোনো উদযাপন করব না। উচ্ছ্বাসের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা করব না।
“ষড়যন্ত্রকারীরা ওত পেতে আছে। তারা যে কোনো সময় সহিংসতা-নাশকতা ঘটাতে পারে। পাশপাশি তিনি (শেখ হাসিনা) বিশ্বাস করেন এই গুরু দায়িত্ব দায়িত্বশীলভাবে পালন করায় উচ্ছ্বাস করা কখনোই সমীচিন হবে না। তিনি তাই নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা সুশৃঙ্খল কর্মীবাহিনী সে নির্দেশ পালন করছি। মনিটর করছি কোথাও যেন কোনো নাশকতা-সহিংসতা উচ্ছাস আবেগের কারণে না হয়।
“আর অপর পক্ষকেও যেন কোথাও কোনোভাবে অপদস্ত করা না হয় বা প্রতিশোধ পরায়ণতা কোনোভাবে মনের মধ্যে না থাকে। এ কাজ আমরা যেন না করি।”
নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীদের কম ভোট পাওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে নওফেল বলেন, তাদের সাধারণ সমর্থকরা চেয়েছিল ভালোভাবে ভোট করতে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তা চায়নি।
“তারা শুরু থেকে বলে আসছিল- আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে আসছে। নির্বাচন কিভাবে আন্দোলনের অংশ হয়? মূলত তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেয়েছিল যাতে আন্দোলনের উছিলা সৃষ্টি করতে পারে।”
তিনি বলেন, “বিএনপির অনেক তরুণ সমর্থকের সাথে কথা বলেছি। তারাও চায়নি উন্নয়নের ধারা বাধাগ্রস্ত হোক, সে যে দলই করুক না কেন। তরুণরা জানত বিএনপি-জামায়াত এখন এক। তারা ক্ষমতায় এলে দেশে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে এ ধারণা বিএনপি সমর্থকদের মধ্যেও ছিল। তাই তারা অনেকে ভোটদানে বিরত ছিলেন।”
নওফেল বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থক এবং সংখ্যালঘুদের ওপর যে প্রতিশোধপরায়ণতা তারা দেখিয়েছিল তা দেশের মানুষ মনে রেখেছে।
“তাই তাদের দলের সমর্থক শুভবুদ্ধির মানুষও তাদের ভোট দেয়নি। তাই ভোটের টার্ন আউটও কম হয়েছে।”
নগর আওয়ামী লীগ নেতা জহর লাল হাজারীর সঞ্চালনায় প্রার্থনা সভায় কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠ করা হয়।