চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে চট্টগ্রাম মহানগরীর ৩টি পূর্ণাঙ্গ আসন ও সংশ্লিষ্ট আরো ৩টি সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগ ও মহাজোট প্রার্থীদের সাথে নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের চট্টগ্রামের উন্নয়নে লক্ষ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের সামগ্রিক উন্নয়নের দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন। তিনি তাঁর সে দায়িত্ব ও প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চট্টগ্রামকে উন্নয়নের জোয়ারে অভিষিক্ত করেছেন। আরো কিছু মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নাধীন আছে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম বিশ্বের একটি আধুনিক নগরী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারকে আবারো ক্ষমতায় এনে সম্মানিত ভোটাররা তাদের ঐতিহাসিক কর্তব্য সম্পাদন করবেন। তিনি প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেন এরা প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত আস্থাভাজন। তাদের হাত ধরেই চট্টগ্রাম অধিকতর উন্নয়নের পথে দাবিত হবে। তাদের বিজয় নিশ্চিত করার জন্য চট্টগ্রামের সর্বস্তরের আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের সর্বস্তরের নেতাকর্মীবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ আছে। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। এ সত্যটি প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বের সাথে অনুধাবন করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম ওয়াসা, বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার জন্য গুচ্ছ গুচ্ছ মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। চট্টগ্রামের অন্যতম সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে বাস্তবমুখী প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা রক্ষায় ৩০ ডিসেম্বর ভোটযুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করে উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরো সুদৃঢ় করতে হবে। মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে চট্টগ্রাম-৯ আসনের প্রার্থী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য বিএনপি ও তাঁর জোট সঙ্গীরা মিথ্যাচার করছেন। তারা তাদের নিশ্চিত পরাজয় সম্পর্কে ওয়াকে বহাল। সম্প্রতি বাংলাদেশে আসা কয়েজকন সাবেক বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে। তারা অনুরোধ করেছিলেন তাদের সাথে আলাপ আলোচনার বিষয়গুলো গণমাধ্যমে না জানানোর জন্য। আমি সে কথা রেখেছি। কিন্তু বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু ঐই বিদেশী কূটনীতিকদের সাথে আলাপ আলোচনার বিষয়গুলো বিকৃতভাবে গণমাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন। এটা শিষ্ঠাচার বর্হিভূত। বোয়ালখালী, চাঁন্দগাও সংসদীয় আসনের মহাজোট প্রার্থী মঈনুদ্দিন খান বাদল এমপি বলেন, বিগত দশ বছরে আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিক আগ্রহে উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত করেছি। আমার দীর্ঘদিনের দাবি কালুরঘাট সেতু, রেল ও সড়ক সেতু নতুন করে নির্মাণ। প্রধানমন্ত্রী আমার এ দাবি মেনে নিয়ে কালুরঘাট উপর রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণের উদ্যোগী হয়ে এ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন করেছেন। এ রেল সেতুটির উপর নির্ভর করছে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রস্তাবিত রেল সেতু নির্মাণের প্রধান অবলম্বন। এ সরকার আবার ক্ষমতায় এলে এক বছরের মধ্যেই কালুরঘাট সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে। হাটহাজারী, ডবলমুরিং সংসদীয় আসনের মহাজোট প্রার্থী পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, হাটহাজারীতে এমন কোন সড়ক নেই যার উন্নয়ন হয়নি। এ এলাকায় যে সকল বাস্তবায়িত হয়েছে এতে মহাজোটের শরিক দলের সকল নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা ছিল। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। সীতাকুন্ড সংসদীয় আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি দিদারুল আলম বলেছেন- ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে সীতাকুন্ড অংশে বিএনপি জামাত জঘন্য ধরণের নাশকতা চালিয়েছে। পরিবহনের উপর পেট্টোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করেছে। তারা এখনও আমাদের নির্বাচনী প্রচারণা মিছিলে পেট্টোল বোমা ছুড়ে নেতাকর্মীদের অগ্নিদগ্ধ করছে। এ আসনে বিএনপি প্রার্থী গাড়ি থেকে পুলিশ পেট্টোল বোমা ও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক সরঞ্জাম উদ্ধার করে ড্রাইভারকে আটক ও গাড়িটিকে জব্ধ করেছে। আমরা তাদের প্রতিহত করবে সর্বাত্মক শক্তি প্রয়োগ করব। মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম-১০ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী, সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান এমপি ডাঃ আফছারুল আমীনও বক্তব্য রাখেন। মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এড. সুনীল কুমার সরকার, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতা ইন্দু নন্দন দত্ত, জেলা জাসদের সভাপতি নুরুল আলম মন্টু, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ রশিদ, উপদেষ্টা আলহাজ্ব শফর আলী, কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুচ ছালাম, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, হাসান মাহমুদ হাসনী, শফিকুল ইসলাম ফারুক, এড. ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, জোবাইরা নার্গিস খান, আবদুল আহাদ, দিদারুল আলম চৌধুরী, হাজী শহিদুল আলম, কার্যনির্বাহী গাজী শফিউল আজম, এড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, বখতিয়ার উদ্দিন খান. শেখ শহিদুল আনোয়ার, মোহাম্মদ জাবেদ, হাজী বেলাল আহমেদ, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিম উদ্দিন শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ সহ সাংবাদিক প্রতিনিধি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।