॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রবীণদের পথ অনুস্মরণ করেই আগামীতে নবীনদের আলোকিত বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। তিনি বলেন, প্রবীনদের যুক্তি, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়েই এ জেলাকে তারা এগিয়ে নিয়ে এসেছে। তাই তাদের অবহেলা করলে চলবেনা। তাদের মানসিক ও শারিরিকভাবে সবসময় সুস্থ রাখতে হবে। এই সুস্থ রাখার কাজটি নিজ নিজ পরিবার ও প্রতিবেশীদের দায়িত্বে পরে। প্রবীণদের অবহেলার চোখে না দেখে, তাদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত ও যাতায়াত ব্যবস্থাসহ তাদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধায় এগিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার (০১অক্টোবর) সকালে “বয়সের সমতার পথে যাত্রা’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে র্যালি, আলোচনা সভা ও ১০জন বিশিষ্ট প্রবীণ ব্যাক্তিকে সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসমব কথা বলেন।
এর আগে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সহযোগিতায় সকালে এ উপলক্ষে রাঙ্গামাটি প্রতিবন্ধী স্কুল ও পূর্নবাসন কেন্দ্র চত্বর থেকে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়ে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
র্যালী ও আলোচনা সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ১০জন বিশিষ্ট প্রবীণ ব্যক্তিকে সম্মাননা প্রদান করেন। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা সমাজ কল্যাণ বিভাগের আহ্বায়ক স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও প্রবীণ সংঘের উপদেষ্ঠা ড. মানিক লাল দেওয়ান, রাঙ্গামাটির দৈনিক গিরিদর্পণ পত্রিকার সম্পাদক চারণ সাংবাদিক একেএম মকছুদ আহমেদ, প্রবীণ সংঘের সভাপতি নীতিশ দেওয়ান। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা আরো বলেন, সকলের ধর্মে রয়েছে বয়স্কদের প্রতি সম্মান ও যতœশীল হওয়া। কিন্তু কিছু কিছু পরিবারকে দেখা যায় বাবা-মা বয়স্ক হলে তাদের প্রতি অবহেলা করে তাদের মানসিকভাবে হেনাস্থা করা হয় যা মোটেই কাম্য নয়। প্রবীণদের বিরুদ্ধে বৈষম্য দূর করে প্রবীণদের সমাজের বোঝা মনে না করার আহবান জানান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। তিনি এ অর্থবছরে পরিষদ হতে প্রবীণদের জন্য যে ভবনটি করা হচ্ছে তা শতভাগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ে প্রক্টর ও ডীন’সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. মানিক লাল দেওয়ান, জেলার বিভিন্ন কমিটিতে সক্রিয় থেকে অদ্যবদি সেবামূলক কর্মকান্ডে পরামর্শ প্রদানের জন্য রাঙ্গামাটি পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাজী নজরুল ইসলাম, দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিশিষ্ট আইনজীবি হিসেবে কাজ করা ও সেবামূলক বিভিন্ন সংস্থায় াবদার রাখায় এ্যাডভোকেট জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, দীর্ঘদিন সাংবাদিকতার সাথে জড়িত থেকে পার্বত্য জেলায় সেবা দেওয়া ও বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় দৈনিক গিরিদর্পণ পত্রিকার সম্পাদক একেএম মকছুদ আহম্মেদ, দীর্ঘদিন খেলাধুলা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাথে সম্পৃক্ত থেকে অবদান রাখায় প্রবীন সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে প্রথম মাষ্টার ডিগ্রী অর্জনকারী মহিলা ও দীর্ঘদিন সমাজসেবা অধিদপ্তরের বৃহত্তর পার্বত্য জেলার বিভিন্ন পদে কর্মরত থেকে জেলার উপপরিচালক হিসেবে অবসর কালীন সময়ে বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রাক্তন উপপরিচালক আরতী চাকমা, বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় প্রাক্তন প্রথম শ্রেণী ঠিকাদার ও সমাজসেবী চন্দ্র শেখর খীসা, অবসরকালীন সময়ে বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন উপপরিচালক ডাঃ সুব্রত চাকমা, অবসরে প্রবীন সংঘ’সহ সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের প্রাক্তন কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার বড়–য়া ও সন্তানদেন উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ ও প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় কুঞ্জলতা ত্রিপুরাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া জাতীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদ থেকে প্রাপ্ত অনুমোদনের এককালীন চেক জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ক্যান্সার, কিডনী এবং বিভিন্ন রোগীদের আর্থিক অনুদান কর্মসূচী থেকে প্রাপ্ত চেক বিতরণ করা হয়।