গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংস্কৃতি চর্চা না হলে একটি জাতি সুস্থভাবে গড়ে উঠতে পারেনা। বাঙ্গালি সংস্কৃতি লালন করার ক্ষেত্রে নাট্যজনদের ভূমিকা নতুন নয়, পুরাতন। নাটকের মাধ্যমে মানুষের মানবিক মূল্যবোধ ও মনুষ্যত্ব জাগ্রত থাকে।দেশকে এগিয়ে নিতে গেলে সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধেও নাট্যজন ও সংস্কৃতিকর্মীদের অবদান অনস্বীকার্য। নাটক, পথ নাটক, গান, কবিতা ও সাহিত্যের মধ্যে দিয়ে দেশের সংস্কৃতি ও স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। বাংলা নাটকের মাধ্যমে মানুষকে উজ্জীবিত করে সমাজের অনাচার ও অসঙ্গতি দূর করতে হবে। বাংলা নাটক দেশের কথা, দশের কথা ও বাঙ্গালি সংস্কৃতির কথা বলবে। সংস্কৃতির মধ্যে দিয়ে মানুষের অধিকার আদায়সহ সমাজকে সচেতন করা হয়েছে। নাটকসহ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমেই সমাজ থেকে মাদক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দূর করা সম্ভব। বাংলা নাটকের মাধ্যমেই ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনক বাংলাদেশের সাধারণ জনগণকে উজ্জীবিত করেছেন। যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। এর পর দেশ বিরোধীচক্র ক্ষমতায় এসে ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানের স্মৃতিচিহ্ন, মহান স্বাধীনতার ইতিহাস প্রায় মুছে ফেলে নাটক ও সংস্কৃতিকর্মীদের উপর কালা কানুন জারী করে। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের নাট্য ও সংস্কৃতি কর্মীদের কল্যাণে কাজ শুরু করেন। সংস্কৃতি চর্চার বিকাশ ঘটাতে সারাদেশের শিল্পকলা একাডেমিগুলোর আধুনিকায়ন ও উপজেলা পর্যায়ের অডিটরিয়ামগুলোকে যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা হয়েছে। ফলে দেশের মানুষ মনের মতো করে নাটক ও সংস্কৃতির অগ্রসর হচ্ছে। মুজিববর্ষ শুরুর প্রাক্কালে বাঙ্গালি সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করার জন্য আজ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ইং বুধবার বেলা ১২টায় গণভবন থেকে চট্টগ্রামসহ দেশের ৬৪ জেলার সাথে ভিডিও কনফারেন্সিংিয়ের সাথে যুক্ত হয়ে মাস ব্যাপী জাতীয় নাট্যোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নাট্যোৎসবের এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘জঙ্গি অবক্ষয় দূর্নীতি, মানবে না এ সংস্কৃতি। দেশে এবারই প্রথম একত্রে ৪ শত নাটকের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চট্টগ্রাম নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে (টিআইসি) ভিডিও কনফারেন্সিংিয়ের সাথে যুক্ত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন ও নাট্য কর্মী ইসরাত নুর মৌ। এর আগে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নাটকের অংশ বিশেষ “অ ভাই আঁরা চাঁটগাইয়া নওজোয়ান, সিনাদি ঠেকাই ঝড়-তুয়ান” শিরোনামে করিওগ্রাফির মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শুনানো হয়। এসময় টিআইসিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদ এনডিসি, সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাসনা জাহান খানম, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাকির হোসেন, পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামাল হোসেন, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, সভাপতি মন্ডলির সদস্য মোসলেম উদ্দিন সিকদার লিটন (জেলা কালচারাল অফিসার), কেন্দ্রীয় সদস্য শহিদুল করিম নিন্টু, সদস্য শুভ্রা বিশ্বাস মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, সহকারী কমান্ডার সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ সাহাবউদ্দিন, সমাজ কর্মী জেসমিন সুলতানা পারু, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য রনজিত কুমার শীল, চসিক’র ৩৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লবসহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ, নাট্য ব্যক্তিত্ব, সংস্কৃতিকর্মী, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া অনুষ্টানে ভিডিও কনফারেন্সিংিয়ের মাধ্যমে সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে পরিবেশন করা হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অমর গীতি নাট্য, রাজশাহী প্রান্ত থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গম্ভীরা গীতি নাট্য, রংপুর টাউন হল থেকে নীল ললিতার গীত এবং ঢাকা প্রান্ত থেকে জঙ্গি অবক্ষয় দুর্নীতি, মানবে না এ সংস্কৃতি গীতি নাট্য পরিবেশন করা হয়। এসময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকগণ ও নাট্য কর্মীদের সাথে কথা বলেন।