চট্টগ্রাম অফিস :: চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সূচকের পাশাপাশি তথ্য প্রযু্িক্ততেও দেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। তিনি আমাদেরকে উন্নত দেশের নাগরিক হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বলেই বর্তমানে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় তথ্য প্রযুক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলেই দেশ এখন প্রযুক্তি নির্ভর। আমরা ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছি। ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন উদ্ভাবন সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। তথ্য প্রযু্িক্তর কারণে অনলাইনে ভূমির নামজারিসহ সরকারি অনেক সেবা অতি অল্প সময়ে, কম খরচে, দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত ছাড়া স্বচ্ছতার সাথে মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে। এগুলো হচ্ছে ইনোভেশন। ইনোভেশনের কারণে বেকার যুবকদের নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। ইনোভেশনের কারণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্যান্য সরকারি সেবাগুলো সহজ হয়ে গেছে। কারিগরি শিক্ষার অগ্রগতির কারণে ঘরে ঘরে তৈরী হচ্ছে উদ্যোক্তা। প্রযুক্তির ভাল দিকগুলো বেছে নিয়ে মন্দ দিকগুলো পরিহার করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তিতে সম্পৃক্ত থাকলেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে। এজন্য তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে বিজ্ঞান বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে কাজ করতে হবে। আজ ৩১ জানুয়ারী ২০২০ ইং শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে আয়োজিত বিভাগীয় পর্যায়ে দু’দিন ব্যাপী ইনোভেশন শোকেসিং এর সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ইনোভেশন শোকেসিংয়ে “হোম এন্ড অফিস সার্ভিস সাপোর্ট সিস্টেম” উদ্ভাবনে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ইনোভেশন টিম।
তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলো জনগনের সামনে তুলে ধরাসহ মেধা ও বিভিন্ন উদ্ভাবনমূলক ধারনাকে কাজে লাগানোর জন্য ইনোভেশন শোকেসিং এর আয়োজন। উন্নত দেশের নাগরিকেরা ঘরে বসে সেবা পায়। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে পারলে এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেবা প্রত্যাশী দপ্তর/সেক্টরের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে কাঙ্খিত সেবা ভোগ পুরোপুরি ভোগ করতে পারবো। ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায় থেকে সরকারি সেবা আরো সহজীকরণ করতে সারাদেশে সাড়ে ৫ হাজারের অধিক ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) করা হয়েছে। ফলে কোন ধরনের হয়রানি ছাড়াই সরকারি ১৩১টি সেবা জনগণ ভোগ করছে। সরকারি দপ্তরগুলোতে চালু করা হয়েছে ই-ফাইলিং সিস্টেম। তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীসহ সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের লোকজনকে নতুন নতুন ইনোভেশনে সম্পৃক্ত করা গেলে ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণসহ ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোঃ নুরুল আলম নিজামীর সভাপতিত্বে ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাবরিনা আফরিন মুস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ইনোভেশন শোকেসিং এর সমাপনী ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ আবু হাসান সিদ্দিক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইয়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ রেজাউল করিম। দু’দিন ব্যাপী ইনোভেশন শোকেসিং এ অংশগ্রহণকারী বিভাগের ১১টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মধ্যে বিচারকের নিরপেক্ষ বিচারে “হোম এন্ড অফিস সার্ভিস সাপোর্ট সিস্টেম” উদ্ভাবনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়-১ম স্থান, “জেলা পর্যায়ে আইসিটি অধিদপ্তরের অনলাইন সেবা ব্যবস্থাপনা ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব মনিটরিং সিস্টেম” উদ্ভাবনে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়-২য় স্থান ও “ প্রকল্পসমূহের একিভূত করণ” উদ্ভাবনে লক্ষীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়-৩য় স্থান অর্জন করেন। অনুষ্ঠান শেষে বিভাগের শ্রেষ্ট তিনটি জেলা ইনোভেশন টিমের হাতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরষ্কার তুলে দেন অনুষ্টানের প্রধান অতিথি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা। অনুষ্ঠানে বিভাগের বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।