চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত অমর একুশে বইমেলা চট্টগ্রাম’র ১৩ তম দিনে “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভা, ইতিহাসের খসড়া সম্পাদক সাংবাদিক মুহাম্মদ শামসুল হক রচিত “চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু ও তার সঙ্গীরা” এবং মুহাম্মদ মামুন চৌধুরী রচিত “বিপ্লবই আমার জীবন” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান গতকাল ২২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় জিমনেশিয়ামস্থ অমর একুশে বইমেলা মঞ্চে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার, দেশের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ও মেলা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক সুমন বড়–য়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক এলেক্স আলিম। মোড়ক উন্মোচন পর্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অমর একুশে বই মেলার অনুষ্ঠান ও আলোচনা উপ কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশের সহযোগী সম্পাদক সুভাষ দে, দৈনিক পূর্বকোণের সাহিত্য সম্পাদক কবি এজাজ ইউসুফী, দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক ছড়া সাহিত্যিক রাশেদ রউফ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক শওকত বাঙালি, মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ-সচিব মো: বেলাল হোসেন প্রমুখ। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন সিইউ ফ্রেন্ডস ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের শিল্পীরা। সভায় প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ ইতিহাসের একটি অনন্য অংশ হয়ে থাকবে। যতদিন বাংলাদেশ এবং বাঙালি থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস চির সমুজ্জ্বল হয়ে থাকবে। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস কখনই রচনা করা সম্ভব নয়। ২০২০ সাল বাঙালি জাতির একটি অসাধারণ ও গৌরবের ইতিহাস। কেননা এ বছরই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। যে জন্ম বার্ষিকী ঘিরে সারা বিশ্ববাসী আজ স্বগৌরবে পালন করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। পৃথিবীর ইতিহাসে একজন সফল রাষ্ট্র নায়ক ও জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীর অনুষ্ঠান সারা বিশ্বের মানুষের কাছে সম্মানের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। বিশ্ব বাঙালি আজ গৌরব এবং শ্রদ্ধার সহিত বঙ্গবন্ধুকে তার শততম জন্মবার্ষিকীর সম্মান জানাতে ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালকে মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা ১৯৭৫ সালে কালো রাত্রিতে স্বপরিবারে হত্যা করার মধ্যে দিয়ে দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছিল। কিন্তু ইতিহাস তার সত্যের পথে চিরঞ্জীব। নানা ষড়যন্ত্র আর অপরাজনীতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ দেশপ্রেমের ইতিহাসকে স্বাধীনতা বিরোধীরা বারে বারে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু ইতিহাসের অনন্য উচ্চতায় আজ বঙ্গবন্ধু স্বগৌরবে, স্বমহিমায় পৃথিবীর কালজয়ী নেতা হিসেবে সমগ্র বিশ্ববাসীর মানুষের কাছে চির স্মরণীয় ব্যক্তি হয়ে আছেন। তিনি বর্তমান প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস চর্চায় মনোযোগী হয়ে দেশপ্রেমের শিক্ষাগ্রহণ করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার আহ্বান জানান। একই সাথে তিনি সাংবাদিক মুহাম্মদ শামসুল হক রচিত “চট্টগ্রাম বঙ্গবন্ধু ও তার সঙ্গীরা” এবং মুহাম্মদ মামুন চৌধুরী রচিত “বিপ্লবই আমার জীবন” গ্রন্থ দুটির সফলতা কামনা করেন। সভার সভাপতি বলেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন বঙ্গবন্ধু বাঙালির হৃদয়ের চির প্রেরণার একটি নাম। বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশ সৃষ্টি হওয়া সম্ভব ছিলনা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে আমরা যত বেশি সম্মান করতে পারব তত বেশি আমরাই আলোকিত হব। তিনি বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ার আহ্বান জানান। তিনি নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর মহান দেশপ্রেম ও ত্যাগের শিক্ষা নিয়ে নিজেদেরকে মানবিক মানুষ হওয়ার অনুরোধ করেন। আজ ২৩ ফেব্রুয়ারী বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামে অমর একুশে বই মেলা মঞ্চে কলম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য সম্মেলন ও গুণীজন সংবর্ধনা এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বই ও সাহিত্য প্রেমি সকলকে উপস্থিত থাকার বিনীত অনুরোধ জানানো হয়েছে।