মশক মুক্ত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ার প্রত্যয় নিয়ে নগরীর ৪১ টি ওয়র্ডে ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। আজ নগরীর চাঁন্দগাও বি ব্লক মসজিদের সামনে ওষুধ ছিটিয়ে মশক নিধন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন, মো. সাইফুদ্দিন খালেদ সাইফু, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিক প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী প্রমুখ। উদ্বোধনকালে সিটি মেয়র বলেন,সমন্বিত মশক নিধন ব্যবস্থাপনার আওতায় প্রথম পদক্ষেপটিই হচ্ছে পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা। আমাদের চারপাশে যেসমস্ত জায়গায় এডিস মশা জন্মায়, সেইসমস্ত জায়গায় যাতে এডিস মশা জম্মাতে না পারে, সেই ব্যাপারে সকলকে সচেতন হতে হবে। আবহাওয়াগত কারণে নগরীতে এখন মশার উপদ্রব বেড়েছে। এই ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতি ওয়ার্ডের ঝোপঝাড় পরিস্কার ও নালায় যেখানে মশার জন্ম হয় সেখানে ওষুধ ছিটানো হবে। ক্রাশ প্রোগ্রাম ছাড়াও চসিকের নিয়মিত কার্যক্রমের মধ্যে প্রতিদিন মশক নিধন স্প্রে চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের যে পরিমাণ মশা ধ্বংসকারী ওষুধ আছে এই ওষুধের সদব্যবহারের মাধ্যমে প্রাপ্তবয়স্ক মশা নিধনের জন্য এডাল্টিসাইড এবং মশার লার্ভা (ডিম) ধ্বংসের জন্য লার্ভিসাইড ওষুধ ছিটানো হবে। ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে নগরবাসীর সহযোগিতা কামনা করে মেয়র বলেন, পরিস্কার ও বদ্ধ পানি এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র। তাই বাসাবাড়ির আশপাশে ডাবের খোসায়, ফুলের টবে, ছাদে, ফ্রিজের নিচের ট্রেতে তিনদিনের বেশী পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বাসা-বাড়ী,ছাদ-আঙ্গীনায় নিজ নিজ উদ্যোগে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এটি আমাদের সকলের নাগরিক দায়িত্ব। চট্টগ্রাম নগরীকে একটি স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ, বাসযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন শহর গড়তে মেয়র সকলের সহযোগিতা কামনা করেন মেয়র। সমসাময়িক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন,করোনা মহামারির এ সময় মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। মশা থেকে মুক্তি পেতে সামাজিক সচেতনতাও জরুরী প্রয়োজন। করোনা ভাইরাস মাহামারীর কারণে সারা দেশে সবকিছু বন্ধ রয়েছে, থমকে আছে সকল প্রকার অর্থনৈতিক কর্মকা-। অর্থনীতির চাকা বন্ধ থাকায় প্রান্তিক মানুষের জীবনের স্রোতও যেন থমকে গেছে। জীবন অবশ্যই আগে। কারণ, জীবন না থাকলে জীবিকার কোন প্রশ্নই আসেনা। কিন্তু জীবিকা না থাকলে জীবন টিকবে কি করে? তার মানে, মহামূল্যবান জীবনকে রক্ষা করতেই জীবিকাই একমাত্র অক্সিজেন। উভয়ে উভয়ের পরিপূরক। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট চিন্তা মহামারীর আঘাতে ক্ষুধায় যেন মানুষ না মরে। যতদিন যাবত এর টিকা আবিস্কার না হচ্ছে ততক্ষণ সতর্কতামূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে সংক্রমন নিয়ন্ত্রনে রাখার কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন, এ অবস্থায় প্রান্তিক মানুষকে সরাসরি ত্রাণ ও আর্থিক সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। কিন্তু একটি মতলবি মহল ত্রাণ বিতরণ নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে, এই অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। ত্রাণ কার্যক্রমে অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্ব^ন করেছেন। সরকার কঠোর অবস্থানে আছে বলেই সামান্য অপরাধ করলেও কেউ রেহাই পাচ্ছে না। বাংলাদেশের মানুষের জীবনের পাশাপাশি জীবিকার চাকা সচল রাখতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ ছুটি কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিথিল করে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যারা মনে করছেন এ সিদ্ধান্ত ভুল, তাদেরকে বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দিকে চেয়ে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা দেশের যে কোন দুর্যোগে আর্ত মানবতায় সবার আগেই মানবিক সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছে অসহায় মানুষের পাশে। দুর্যোগ কালে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। মেয়র বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে এ বাধা দূর করে বাংলাদেশ আবার এগিয়ে যাবে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১ দশকে বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সক্ষমতা অর্জন করেছে, সেজন্যে এই সংকটকালেও এত বিপুল পরিমান প্রণোদনা ও ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন সরকারের তরিৎ ত্রান সহায়তা ও প্রনোদনা প্রদান সমসাময়িক বিশ্বে নজিরবিহীন। সামাজিক ও শারিরিক দূরত্ব বজায় এবং অবশ্যই মুখে মাক্স ব্যবহার করার অভ্যাস সময়ের জরুরী প্রয়োজন।