চসিক ৫ম নির্বাচিত পরিষদের মেয়র,কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রীতি সম্মিলন অনুষ্ঠিত : সফলতার ভান্ডারকে সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে– মেয়র

এম কে মোমিন : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, নির্বাচিত পঞ্চম পরিষদকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির উর্ধে রেখে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা ও আকাক্সক্ষা পূরণে একটি অভিন্ন ও একান্নবর্তী পরিবারে পরিণত করে অর্জন ও সফলতার ভান্ডারকে সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে। পঞ্চম পরিষদের মেয়াদকালে সিটি কর্পোরেশনের ৩১ বছরের পুঞ্জিভূত সমস্যার সমাধান করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিক সন্তুষ্টির পরিবেশ তৈরী হওয়ায় কাজের গতিশীলতা ও উদ্দীপনা প্রাণবন্ত রূপ পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা পরিহার করে পরার্থপর মনোবৃত্তিই সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। ব্যক্তিক চাওয়া-পাওয়ার হিসেব বাদ দিয়ে সমাজকে কী দিলাম এবং কতটুকু সামর্থ্য উজার করে সামষ্টিক মঙ্গল ও কল্যাণ করতে পারি সেটাই হলে ক্ষমতা ও যোগ্যতার প্রধান মাপকাঠি। আজ সকালে নগরীর থিয়েটোর ইনস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়োজনে চসিক ৫ম নির্বাচিত পরিষদের সফল মেয়াদ পূর্তিতে মাননীয় মেয়র ও কাউন্সিলর এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রীতি সম্মিলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন। তিনি সকল শুভ উদ্যোগে ঐক্যবদ্ধ সংঘ শক্তির উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, যারা নির্বাচিত হন তাঁরা জনপ্রতিনিধি এবং নাগরিক সমাজেরও বিশ্বাসভাজন। তাই কোন গোষ্ঠী বা দলীয় পরিচয় মুখ্য নয়, আসল কর্তব্য হলো নাগরিকদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। আমি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত পরিষদ সদস্যরা যাতে নাগরিকদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন সেজন্য যথাসাধ্য সহযোগিতা করেছি। তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জনবল ও তাদের পেশাগত ভিত্তি ও দক্ষতার শ্রেনি বিন্যাস প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মোট জনবল সাড়ে ৯ হাজারের কাছাকাছি। তবে এতদিন জনবলের প্রোবিধান ও টেকসই অর্গানোগ্রাম ছিলো না। এমনকি গ্রেডিশন তালিকাও ছিলো না। তাই পদায়ন ও পদোন্নতি ঝুলে থাকতো। অনেকে ২৭/২৮ বছর একটানা চাকুরী করেও বেতন-ভাতা ছাড়া কোন বেনিফিট পাননি এবং চোখের পানি ফেলে শুন্য হাতে ফিরতে হয়েছে। চাকুরীর ভিত্তি ছিল দুর্বল। এখন সেই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সময়োপযোগী অর্গানোগ্রাম তৈরী করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং অবশ্যই তা অনুমোদিত হবে। এই গ্রেডেশন তালিকানুযায়ী পদায়ন,পদোন্নতি এবং দক্ষ লোকবল নিয়োগ হবে। তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, পঞ্চম পরিষদ ক্ষমতাগ্রহণের আগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাসিক বেতন ও অন্যান্য ভাতা বাবদ প্রদান করা হতো ৯ কোটি টাকা। বর্তমানে তা ১৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। পূর্বতন মেয়র অস্থায়ীদের অবসর পরবর্তী ১ লাখ টাকা করে দিয়েছেন। আমি দিচ্ছি ২ লাখ টাকা করে। এছাড়া চতুর্থ শ্রেনি কর্মচারীদের বেতন ১০৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন দু’দফায় ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে মেয়াদকালীন সময়ে বাড়তি আর্থিক চাপ ছিলো। এরপরও আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়ন ও রাজস্ব আদায় বাড়িয়ে নিয়মিত বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়েছে। তিনি গণমাধ্যমে তাঁর মেয়াদকালীন সময়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের দেনা-পাওনা নিয়ে ফলাও করে প্রকাশিত সংবাদকে একপেশে আখ্যায়িত করে বলেন, আমি গণমাধ্যম থেকে ইতিবাচক সমালোচনাকে গুরুত্ব দিই। কিন্তু ৮শ কোটি টাকা দেনা থাকার কথা বলা হয় তা মোটেও সত্য নয়। এমন কিছু প্রকল্প থাকে যা সরকার এবং আমাদের অংশ গ্রহণ থাকে। তা হলে দেনা কেন হবে। আসলে এটা ম্যাচিং ফান্ড। এ ধরনের ফান্ড অনেক ক্ষেত্রেই থাকে। অথচ আমাদেরকে দেনার দায় চাপিয়ে পরিবেশিত খবরটি যাচাই বাছাই করা হয়নি। এতে জনগনকে স্পষ্ট তথ্য না দিয়ে ধোয়াঁশা তৈরী করা হয়েছে। তিনি গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন নগরবাসীরই ক্ষতি হবে। এটা কারো কাম্য হতে পারেনা। বিগত সময়ে যারা মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন তাঁদের রেখে যাওয়া ৩শ কোটি টাকা দেনার মধ্যে আড়াইশ কোটি টাকা আমার মেয়াদেই পরিশোধ করা হয়েছে। এই দেনা পরিশোধ করা না হলে আরো কিছু উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হতো। সভার শুরুতে শোকাহত আগস্ট মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সহ তাঁর পরিবারের সকল সদস্য এবং অন্যান্যদের প্রতি বিনম্্র শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করেন। মেয়র চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে নব নিযুক্ত প্রশাসককে অভিনন্দিত করে তাঁর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান এবং নগরবাসীকেও সহযোগিতার আহবান জানান। পরে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে ও কর কর্মকর্তা সাহেদা বেগমের উপস্থাপনায় প্রীতি সম্মীলন অনুষ্ঠানে অনুভুতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, সাইয়্যেদ গোলাম হায়দার মিন্টু, ইসমাইল বালী, ছালেহ আহমদ চৌধুরী, মোহাম্মদ আজম, সরংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিরদের পক্ষে আঞ্জুমান আরা বেগম, চসিক সচিব আবু সাহেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী লে.কর্ণেল সোহেল আহমদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুফিদুল আলম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়–য়া, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রেজাউল করিম, চসিক শ্রমিক ইউনিয়ন(সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, ইউএনডিপির টাউনম্যানেজার সরোয়ার আলম খান। এছাড়া চসিক প্যানেল মেয়র জোবাইরা নার্গিস খান, প্রফেসর ড.নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু,সাধারন কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, যুগ্ম জেলা জজ জাহানারা ফেরদৌস, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী চসিক সিবিএ এর সভাপতি ফরিদ আহমদ চৌধুরী সহ বিভাগীয় ও শাখা প্রধান,কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।

মুক্ত গণমাধ্যম চাই : সকল গণমাধ্যমে এক নীতিমালা, তথাকথিত ওয়েজ বোর্ড বাতিল, নিজস্ব বেতন বোর্ড, বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র নীতিমালা নিয়ন্ত্রণ মুক্ত, প্রয়োজনীয় কাঁচামালের মূল্য কমানো ও মফস্বলের পত্রিকাগুলো সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে টিকিয়ে রাখতে হবে

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031