॥রাহুল বড়–য়া ছোটন, বান্দরবান ॥ যেকোন সরকারি বন্ধে, পূজা ও ঈদের ছুটিতে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের মেঘলা, নীলাচল, বগালেক, চিম্বুক, শৈলপ্রপাত, নীলগীরি, নীলদিগন্ত সহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ঘুরতে যায় অসংখ্য দেশি বিদেশি পর্যটক। কিন্তু এবার করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরণের পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখায় বান্দরবানের পর্যটকদের আগমন ঘটেনি। পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মুলফটকে লাগানো হয়েছে তালা আর কর্র্মচারীরা পার করছে অলস সময়। পর্যটক না থাকায় বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে বিরাজ করছে শুনসান নীরবতা। বান্দরবান জেলা প্রশাসন পরিচালিত পর্র্যটনকেন্দ্র মেঘলা ঘুরে দেখা যায় প্রতিবছর এসময়টা পর্যটনকেন্দ্রে অসংখ্য পর্যটক থাকলে ও এবারে কোন পর্যটক নেই বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে টিকেট কাউন্টার রাখা হয়েছে বন্ধ। পর্যটনকেন্দ্র মেঘলার তত্বাবধায়ক সুকুমার তঞ্চঙ্গ্যা জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বান্দরবানের সকল পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ রাখার জন্য নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাই এবারে সকল পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ। সুকুমার তঞ্চঙ্গ্যা আরো জানান,আমাদের এই পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমনে প্রতিদিনই অনেকে মূল ফটকের সামনে আসে কিন্তু অনুমতি না থাকায় আমরা কাউকে প্রবেশ করে ভ্রমন করতে দিই না। বান্দরবানের আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর কোরবানীর ঈদের বন্ধে বান্দরবানের প্রচুর পর্যটকের আগমন হয়, কিন্তু এবারে বান্দরবানে কোন পর্যটক নেই, আর আমাদের সব ব্যবসা বন্ধ হয়ে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, করোনার কারণে বান্দরবানের পর্যটন ব্যবসায় একেবারে ধস নেমে এসেছে। বান্দরবান আবাসিক হোটেল হিলভিউ এর জেনারেল ম্যানেজার মো: সুলতান বলেন, করোনায় আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। আমাদের বান্দরবানের সকল হোটেল মোটেল বন্ধ থাকায় অনেক কর্মচারী বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে, পর্যটক আসা বন্ধ থাকায় জেলার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা নতুন ব্যবসার চিন্তা করছে। এদিকে বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: শামীম হোসেন জানান, কোরবানীর ঈদে বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখা হলে ও শীঘ্রই বান্দরবানের সকল পর্যটনকেন্দ্র ও সকল আবাসিক হোটেল মোটেল খোলা হবে এবং বান্দরবান ভ্রমনে পর্যটকরা আরো বেশি আনন্দ পাবে। তিনি আরো জানান,বান্দরবানে দীর্ঘদিন লকডাউন ছিল আর বন্ধ ছিল যানবাহন চলাচল, তবে এখন শুধু পর্যটনকেন্দ্র ও আবাসিক হোটেল মোটেল বন্ধ। বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: শামীম হোসেন আরো জানান, বান্দরবানের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে এই বন্ধে আরো নিত্যনতুন কাজ করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বান্দরবানের সকল পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে এবং দেশী বিদেশি প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটবে। প্রসঙ্গত, গত ৮মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার ১০দিন পর ১৮মার্চ থেকে বান্দরবানের সকল আবাসিক হোটেল মোটেল ও পর্যটনকেন্দ্র পর্যটকদের জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় বান্দরবান জেলা প্রশাসন আর সেই থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে বান্দরবানের সকল আবাসিক হোটেল মোটেল ও পর্যটনকেন্দ্র।