চট্টগ্রাম ব্যুরো :: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, চিকিৎসা সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের হ্নত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে হবে। এক সময় সিটি কর্পোরেশনের মেটারনিটি হাসপাতালগুলো প্রসূতি মায়েদের সেবা প্রদানে নগরবাসীর আস্থা অর্জন করেছিল এবং সারা বছরই প্রসূতি মায়েদের ভীড় লেগেই থাকতো। আমি দেখেছি অনেক দূর দুরান্ত থেকে মানুষ এখানে সেবা নিতে আসতেন। সর্বোপরি চিকিৎসা ব্যবস্থার দক্ষতা ও সক্ষমতা সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল। পরবর্তীতে নানা কারণে সে সুনাম আর ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। তিনি আজ সকালে কাট্টলী মোস্তফা হাকিম সিটি কর্পোরেশন মাতৃসদন হাসপাতালে আকষ্মিক পরিদর্শনকালে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন ডাক্তার পেশাটি একটি মহান পেশা। একজন ডাক্তার জীবন এবং মৃত্যুর মাঝখানে দাড়িয়ে জীবনের ফুল ফোটান। তাই সকল ডাক্তারদের আরো আন্তরিক হতে হবে। নিজের মতো করে নিজের কর্মস্থলকে সাজিয়ে নিতে হবে। হাসপাতালগুলোর সেবার মান অবনতিশীল হওয়ায় রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন না। অনিয়ম ও ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্যসেবার কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। বিশেষ করে প্রান্তিক শ্রেনীর মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ ও নিশ্চিত করতে যে লক্ষ্য,পরিকল্পনা ও দায়বদ্ধতা থাকা উচিত তা অবশ্যই করতে না পারলে তা ভাবমূর্তির সংকট তৈরী হয়। এই সংকটে যাতে পড়তে না হয় তার জন্য সকলকে শতভাগ পেশাগত দায়বদ্ধতা নিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি স্বীকার করেন যে, দীর্ঘদিন ধরে সুসংহত চাকুরীবিধি ও প্রবিধান না থাকায় অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা এখানে চাকুরি করতে আগ্রহী নন। একজন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর যে সম্মানজনক বেতন কাঠামো থাকা দরকার তা অবশ্যই হবে এবং মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে শীঘ্রই প্রজ্ঞাপন জারি হবে বলে আশা করছি। তখন সিটি কর্পোরেশনে দক্ষ জনবল নিয়োগে কোন বাধা থাকবেনা। পরিদর্শনকালে প্রশাসক হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীদের খোঁজ খবর নিয়ে তাদের সাথে কথা বলেন এবং সেবা পেতে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা জানতে চান। প্রশাসক হাসপাতালে রোগী স্বল্পতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার এই ঝটিকা অভিযান চলমান থাকবে। রাত কিংবা দিনে আমি হাসপাতাল ভিজিট করবো। এতে কোন অনিয়ম, দূর্ণীতি কিংবা রোগীসেবা বঞ্চিতের অভিযোগ আমলে নিয়ে কর্তব্যরতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চসিক পরিচালিত হাসপাতালগুলোতে যে কোন অভিযোগ বা পরামর্শ আমলে নেয়া হবে। এ সময় প্রশাসক হাসপাতালের রেজিস্টার, হাজিরা বহি, ওষুধপত্র ও মালামাল ষ্টোর তদারকী করেন এই হাসপাতালের সার্বিক পরিস্থিতি ও আয়-ব্যয় হিসাব দাখিলের নির্দেশনা দেন। প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে চক্ষু ও ডেন্টাল হাসপাতাল কর্নার খোলার বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন বলে উল্লেখ করেন। পরিদর্শনকালে ডাক্তার নাসিম ভুঁইয়া, ডাক্তার সুশান্ত, ডাক্তার ইফাত জাহান, ডাক্তার নোমান, ডাক্তার আইরিন, ডাক্তার সেলিনা সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।