কোলের শিশু থেকে বৃদ্ধ। কারও কারও হাতে লাল সবুজের পতাকা। সবার মুখে হামদ, নাত, দরুদ আর স্লোগান। দৃষ্টি কাড়ছে ফ্রান্সের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানানো প্লেকার্ডও।
নগরের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকাহ-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে শুরু হওয়া ঐতিহ্যবাহী জশনে জুলুস জামেয়া মাঠে ফেরার দৃশ্য এটি।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) সকাল সোয়া ৮টায় বের হওয়া জুলুসটি বিবিরহাট, মুরাদপুর হয়ে প্রধান সড়ক ধরে দুই নম্বর গেট, জিইসির মোড়, ওয়াসা পর্যন্ত যায়। এরপর একই সড়ক দিয়ে আবার সোয়া ৯টায় জুলুস জামেয়া মাঠে ফিরে আসে।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ও শুক্রবার জুমার নামাজের কারণে এবার জুলুসের রোডম্যাপ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
জুলুসে নেতৃত্ব দেন আনজুমানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, জামেয়ার অধ্যক্ষ মুফতি অছিউর রহমান আলকাদেরি প্রমুখ।
জুলুসকে ঘিরে রেললাইনের দুই পাশসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বসেছে মেলা। ডাব, শসা, পাজামা, পাঞ্জাবি, আতর, টুপি, মাস্ক, স্যানিটাইজার সহ রকমারি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। আশেকরা তবররক হিসেবে বিলি করছেন চকলেট, খেজুর, শরবত, কোমল পানীয় ইত্যাদি।
১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় এ জুলুস হয়ে আসছে। ওই বছর নগরের বলুয়ার দীঘি খানকাহ থেকে আল্লামা তৈয়্যব শাহ (রা.) এ জুলুসের প্রচলন করেন।
গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার বাংলানিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি ও জুলুসের শৃঙ্খলা এবং মাহফিলের আদব রক্ষায় আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের পাশাপাশি কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন। মুখে মাস্ক না থাকলে জুলুস বা মিলাদে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে কয়েক লাখ মাস্ক।
জুলুস ফিরে এসেছে জামেয়া মাঠে। মিলাদ, জুমার নামাজ ও আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। আখেরি মোনাজাতে করোনামুক্ত বিশ্বের জন্য দোয়া করা হবে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপ কমিশনার (সিটি এসবি) মো. আবদুল ওয়ারিশ বাংলানিউজকে জানান, জুলুস উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিয়মিত পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও রয়েছে।