(১) : ক্লিং শিল্প ঃ আর্থ-সামাজিক প্রভাব।
বাংলাদেশের আর্থ – সামাজিক উন্নয়নে রিসাইক্লিং শিল্পের অবদান ব্যাপক। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় দুই লক্ষাধিক শ্রমিক এই শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত কর্মকান্ডে জড়িত। এই শিল্প থেকে সরাসরি রাজস্ব আয় প্রায় ১৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এর সমান পরোক্ষ মাল্টিপলট্যাক্সসহ এর থেকে আয় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এরও বেশি। আভ্যন্তরীন জাহাজ নির্মান, রিসাইক্লিং মিলস, ষ্টিলমিলস ইত্যাদি কারখানা বেশির ভাগ কাঁচামালের যোগান দেয় জাহাজ রিসাইক্লিং। এছাড়াও আসবাব, বিদ্যুৎ , বিভিন্ন কলকারখানা রপ্রচুর যন্ত্রাংশ জাহাজ রিসাইক্লিং থেকে আসে বিশেষকরে বাংলাদেশের বিরাট সম্ভাবনাময় হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং (খরমযঃ ঊহমরহববৎরহম) খাতের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আসে পুরানো জাহাজের ভেতর থেকেই। আভ্যন্তরীন জাহাজ নির্মানশিল্পের লোহাও যন্ত্রপাতির আনুমানিক শতকরা ৬০ ভাগও সমগ্র দেশের লোহার চাহিদার প্রায় শতকরা ৬৫ ভাগ আসেপ ানোভাংগা জাহাজ থেকে । দেশের সার্বিক অর্থ নির্ভীত্তে জাহাজ রিসাইক্লিং শিল্পের অবদান প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই শিল্পের মাঝে বিরাট সংখ্যক মানুষের জীবিকা, দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড এবং জিডিপিএর প্রবৃত্তি অনেকাংশে নির্ভরশীল।
(২)
এই শিল্পের চ্যালেঞ্জসমুহ ঃ
পরিশে দুষণ, পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়গুলো যথাযথভাবে না মানার কারনে আলোচ্য শিল্প, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে। উপরোল্লিখিত কারণে ২০০৯ – ২০১০ সালে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে শিপরি সাইক্লিং কর্মকান্ড প্রায় দেড় বছর বন্ধছিল; পরোবর্তিতে শর্ত সাপেক্ষে আবার চালুহয়। দেশের অর্থনীতিতে এই শিল্পের প্রয়োজনীয়তা উপলোদ্ধি করে সরকার এই ক্ষেত্রকে সর্বপূর্বে শিল্পের মর্যাদা দেয়। শিল্পমন্ত্রনালয় এর প্রচেষ্টা পরিবেশ দুষণ ও পেষাগতস্বাস্থ সুরক্ষার ক্ষেত্র সমুহ উন্নতি হলেও এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মান এর বিবেচনায় অনেক পিছিয়ে। বিগত এক দশকেইয়ার্ড গুলোর স্থাপনা, যন্ত্রপাতির ব্যবহার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে; তবে আরও অনেক দুর এগুতে হবে আন্তর্জাতিক মান অর্জনকরতে ও স্বীকৃতি পেতে।
পরিবেশগত ও পেশাগতস¦াস্থ সুরক্ষা এবং বিপজ্জনক বজর্ – ব্যবস্থাপনা, বিষয় গুলো আন্তর্জাতিক ভাবে অত্যন্ত স্পর্ষকাতর। পুরানোজাহাজ ক্রয়ের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মান রক্ষা ব্যবসায়িক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
(৩)
মিতিএন্টাপ্রাইজ ও আই.আর. ক্লাস এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর ঃ
মিতি এন্টার প্রাইজ আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান কাজ করার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একটি পরামর্ষক ফার্ম সম্প্রতি ওহঃবৎহধঃরড়হধষ অংংড়পরধঃরড়হ ড়ভ ঈষধংংরভরপধঃরড়হ ঝড়পরবঃরবং এর সদস্য আই. আর. ক্লাসের সাথে বাংলাদেশের শিপরিসাইক্লিং ইয়ার্ডগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নিত করারজন্য চ্যালেঞ্জ গ্রহন করেছে।
মিতি এন্টারপ্রাইজ ২০০৯ সাল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে এবং এর চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বিগত প্রায় ২০ বছর যাবৎ“শিপ ব্রেকার্স ও রিসাইক্লারস মালিক সমিতির”উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করে আসছে। ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী ২০০৫ – ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পক্ষে ওহঃবৎহধঃরড়হধষ গধৎরঃরসব ঙৎমধহরুধঃরড়হ (ওগঙ) এর গধৎরহব ঊহারৎড়হসবহঃধষ চৎড়ঃবপঃরড়হ ঈড়সসরঃঃবব (গঊচঈ) এর ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য ছিলেন; গঊচঈ এরআলোচ্য কমিটিই“ ঞযব ঐড়হমশড়হম ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈড়হাবহঃরড়হ ভড়ৎ ঃযব ঝধভব ধহফ ঊহারৎড়হসবহঃধষষু ঝড়ঁহফ জবপুপষরহম ড়ভ ঝযরঢ়ং” প্রনয়ন করেছে।
(৪)
হংকং কনভেনশনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মান এর প্রশিক্ষন ও সার্টিফিকেশন এর ক্ষেত্রে ওজঈখঅঝঝ সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য নাম। বাংলাদেশ, ভারতসহ সকল রিসাইক্লিংইয়ার্ড এর সার্টিফিকেশন এর দায়িত্ব ঔঅঈঝ সদস্যভুক্ত “ক্লাসিফিকশন সোসাইটি”গুলোকে প্রদান করা হয়েছে। মোট ১৩ টিসদস্য ক্লাসিফিকেশন সোসাইটির মধ্যে বাংলাদেশে কাজে লিপ্ত আছে মাত্র ৬ টি সোসাইটি। উক্ত ৬ টির মধ্যে মাত্র ৩ টি সোসাইটি শিপরিসাইক্লিং কর্মকান্ডে নিযুক্ত।
ক্লাসিফিকেশন সোসাইটির মুল কাজ শিপবিল্ডিংএর সাথে সম্পৃক্ত; জাহাজের নকশা অনুমোদন থেকে নির্মান কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত গুনগতমানের নিশ্চয়তা বিধান এর প্রধানকাজ। জাহাজ চলাকালীন সময়েও সার্ভের মাধ্যমে এর কাজ বজায় রাখে নিরাপদে চলাচল করার জন্য। শিপরিসাইক্লিং বিষয়ে নিজেদের প্রস্তুত করার ব্যাপারে মাত্র ৩ টি সোসাইটি আগ্রহ দেখিয়েছে; যেগুলো হচ্ছে ওজঈখঅঝঝ/ওহফরধ, জওঘঅ/ওঃধষু, ঘকক/ঔধঢ়ধহ. আলোচ্য ৩টির মধ্যে আবার ওজঈখঅঝঝ সর্বাগ্রে। ওজঈখঅঝঝ ইতিমধ্যে ২৩টির মত ঐড়হমশড়হম ঈড়হাবহঃরড়হ এর ঝঙঈ (ঝঃধঃবসবহঃ ড়ভ ঈড়সঢ়ষরধহপব) ইস্যু করেছে।
(৫)
বাংলাদেশ ও ভারত শিপরিসাইক্লিং এ সবচেয়ে বেশি এগিয়ে; বাংলাদেশ ও ভারত তিন চতুর্থাংশের মত জাহাজ রিসাইকলকরে থাকে; বাকী এক চতুর্থাংশ চীন, তুরস্ক ও পাকিস্থান মিলিতভাবে করে থাকে। যৌক্তিক কারনেই ভারতের ওজঈখঅঝঝ এই সেক্টরটিতে অনেক বেশি দক্ষ ও সম্পৃক্ত।
হংকং কনভেনশনের সনদ প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটি হচ্ছে; প্রথম ষ্টেইজ ওয়ান একটি অডিট হবে এটা মুলত; হংকং কনভেনশনের আলোকে ত্রুটিগুলোকে চিহ্নিত করা। পরবর্তিতে ত্রুটিগুলো সংশোধন করে, জনবলকে প্রতিনিধি করার পর ষ্টেইজ টু বা চূড়ান্ত অডিট সফল ভাবে শেষ হওয়ার পর; গুনগত মান নিশ্চিত হবার পরই ঝঙঈ (ঝঃধঃবসবহঃ ড়ভ ঈড়সঢ়ষরধহপব) সনদ প্রদান করবে ওজঈখঅঝঝ.
২০২৩ সালেরমধ্যে বাংলাদেশের হংকং কনভেনশন বাস্তবায়নের ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা আছে। সুতরাং, রিসাইক্লিং ইয়ার্ডগুলোকে ব্যবসা চালাতে হলে হংকং কনভেনশন বাস্তবায়ন এর বিকল্প নেই। আন্তরিক হলে সামর্থো সাপেক্ষে ১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে একটিই য়ার্ড সনদ পাবার ক্ষেত্রে যোগ্যতা অর্জন করতে পারে। (খবর বিজ্ঞাপ্তি।