॥ ডেস্ক রিপোর্ট ॥ বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে মন্ত্রীদের এবং পরে ৭টা ১৭ মিনিটে প্রতিমন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের আগে টানা চতুর্থবার এবং মোট পঞ্চমবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা।
মন্ত্রী হিসেবে যারা শপথ নিলেন
আ ক ম মোজাম্মেল হক, ওবায়দুল কাদের, নূরুল মজিদ হুমায়ূন, আসাদুজ্জামান খান কামাল, ডা. দীপু মনি, মো. তাজুল ইসলাম, মুহাম্মদ ফারুক খান, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, মো. আব্দুস শহীদ, সাধন চন্দ্র মজুমদার, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মো. আব্দুর রহমান, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, আব্দুস সালাম, মহিবুল হাসান চৌধুরী, ফরহাদ হোসেন, মো. ফরিদুল হক খান, মো. জিল্লুল হাকিম, সাবের হোসেন চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, নাজমুল হাসান, স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রীদের মধ্যে স্থপতি ইয়াফেস ওসমান ও সামন্ত লাল সেন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যারা শপথ নিলেন সিমিন হোমেন রিমি, নসরুল হামিদ, জুনাইদ আহমেদ পলক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মো. মহিববুর রহমান, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাহিদ ফারুক, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, রুমানা আলী, শফিকুর রহমান চৌধুরী ও আহসানুল ইসলাম (টিটু)। শপথ নেওয়ার পর পরই তাদের দপ্তর বণ্টনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। এর আগে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন সংসদ সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বুধবার সন্ধ্যায? মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগের পাশাপাশি তার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সম্মতিও দেন রাষ্ট্রপতি।
নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও গণ্য করার কথা বলা হয়েছে প্রজ্ঞাপনে।
এর আগে বুধবার সকাল ১০টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ নবনির্বাচিত ২৯৮ সংসদ সদস্য। তার আগে সংসদ সদস্য হিসেবে প্রথমে শপথ গ্রহণ করেন বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী। এরপর স্পিকার হিসেবে তিনি শেখ হাসিনাসহ অন্য সংসদ সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান। জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র হিসেবে বিজয়ীরাও এদিন শপথ নেন। সংসদ নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো সংসদ নেতা হলেন তিনি। একাদশ সংসদে মতিয়া চৌধুরী ছিলেন সংসদ উপনেতা। এবারও এ পদে তাকে বেছে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। চিফ হুইপ হয়েছেন গত সংসদে এ পদে দায়িত্ব পালন করা নূর-ই-আলম চৌধুরী।
শপথ নেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশে দ্বাদশ সংসদ গঠিত হয়। বাকি ছিল প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের বিষয়টি। রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেওয়ার পর সে কাজটিও সম্পন্ন হয়ে যায়।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয? সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয় পেয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ২২৩টি আসনে বিজয়ী হয়েছে নৌকা। জোট শরিকরাও নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে দুটি আসন পেয়েছেন। জাতীয় পার্টি ১১ ও কল্যাণ পার্টি একটি আসন পেয়েছে। প্রথমবারের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২ আসন বাগিয়ে নিয়েছেন, যদিও তাদের মধ্যে বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের নেতা।
এদিকে নতুন সরকারের নতুন ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রীর দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়েল দায়িত্ব পালন করবেন।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন ২৫ মন্ত্রী
১. আ ক ম মোজাম্মেল হক- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
২. ওবায়দুল কাদের- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।
৩. আবুল হাসান মাহমুদ আলী- অর্থ মন্ত্রণালয়।
৪. আনিসুল হক- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৫. নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন- শিল্প মন্ত্রণালয়। ।
৬. আসাদুজ্জামান খান (কামাল)- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
৭. মো. তাজুল ইসলাম- স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
৮. মুহাম্মদ ফারুক খান- বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৯. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ- পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
১০. ডা. দীপু মনি- সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।
১১. সাধন চন্দ্র মজুমদার- খাদ্য মন্ত্রণালয়।
১২. আব্দুস সালাম- পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
১৩. মো. ফরিদুল হক খান- ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
১৪. র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী- গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
১৫. নারায়ণ চন্দ্র চন্দ- ভূমি মন্ত্রণালয়।
১৬. জাহাঙ্গীর কবির নানক- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়।
১৭. মো. আব্দুর রহমান- মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
১৮. মো. আব্দুস শহীদ- কৃষি মন্ত্রণালয়।
১৯. স্থপতি ইয়াফেস ওসমান- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
২০. ডা. সামন্ত লাল সেন- স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
২১. মো. জিল্লুল হাকিম- রেলপথ মন্ত্রণালয়।
২২. মো. ফরহাদ হোসেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
২৩. নাজমুল হাসান (পাপন)- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।
২৪. সাবের হোসেন চৌধুরী- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
২৫. মহিবুল হাসান চৌধুরী- শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
প্রতিমন্ত্রী – ১১ জন
১. নসরুল হামিদ- বিদ্যুৎ বিভাগ।
২. খালিদ মাহমুদ চৌধুরী- নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়।
৩. জুনাইদ আহমেদ পলক- ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
৪. জাহিদ ফারুক- পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়।
৫. সিমিন হোমেন রিমি- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৬. কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
৭. মো. মহিববুর রহমান- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
৮. মোহাম্মদ আলী আরাফাত- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
৯. শফিকুর রহমান চৌধুরী- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
১০. রুমানা আলী- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
১১. আহসানুল ইসলাম (টিটু)- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) জাতীয? সংসদ নির্বাচনের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী, ২৫ জনকে মন্ত্রী ও ১১ জনকে প্রতিমন্ত্রী নিয?োগে সম্মতি দেন রাষ্ট্রপতি।
গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয? সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয?ামী লীগ। টানা চারবার সরকার গঠন করলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।