॥ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ॥ টানা ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়িতে বন্যার পাশাপাশি ব্যাপক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ি নি¤œাঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে সহস্রাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলায় পাহাড় ধস ও বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খোলা হয়েছে ১০০টি আশ্রয় কেন্দ্র। এ পরিস্থিতিতে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) ভোর রাতে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার সাপমারায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ মাটি সরিয়ে ৪ ঘণ্টা পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। এর আগে ভোরের দিকে খাগড়াছড়ির সাপমারা এলাকায় সড়কের পাশে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৪ ঘণ্টা খাগড়াছড়ির সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের যান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। এ দিকে পাহাড় ধসে খাগড়াছড়ি শহরের শালবাগান, হরিনাথ পাড়া গ্যাপ, রুসুলপুর ও মেহেদীবাগ এলাকায় বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কোন ধরনের হতাহত না হলেও সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
অপরদিকে দীঘিনালার কবাখালী ও মেরুং এলাকায় সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় রাঙ্গামাটির সাজেক ও লংগদুর সাথে খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং চলছে।
মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে জেলা শহরের মুসলিম পাড়ার একাংশ, মিলনপুর, কল্যাণপুর, মেহেদিবাগ, উত্তর ও দক্ষিণ গঞ্জপাড়া, শান্তিনগর ও বাঙ্গালকাটির একাংশ এলাকায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে। লোকজন বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, পৌর এলাকায় ১৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাহাড়ের নীচে বসবাসরত মানুষদের সরিয়ে আনতে কাজ করছে পৌর কমিশনার ও প্রশাসন।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, পুরো জেলায় ১০০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।