জলাবদ্ধতায় চট্টগ্রাম নগরী

নগরীর আগ্রাবাদ এক্সেস সড়ক, বড়পোল মোড়, সিডিএ আবাসিক এলাকা, পোর্ট কলোনির কয়েকটি সড়ক, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, বহদ্দারহাট মোড়, বহদ্দার বাড়ি সড়ক, হালিশহর, পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

এছাড়া নগরীর জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেইট, প্রবর্তক মোড়, মেহেদীবাগ এলাকায় সড়কেও পানি জমে যায়।

নগরীর জলাবদ্ধতা ও সড়কের বেহাল দশা নিয়ে সকালে নগর ভবনে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগেই টানা বৃষ্টিতে নগরীর এসব এলাকার সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

সোমবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত নগরীর কেন্দ্রে আমবাগান আবহাওয়া অফিসে ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

অন্যদিকে নগরীর দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসে সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ৩৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এর আগে রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আমবাগান আবহাওয়া অফিসে ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

সে হিসেবে রোববার সকাল থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীতে ১৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

জলাবদ্ধতার কারণে নগরীর কয়েকটি সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। আবার কোনো কোনো স্থানে যানবাহনের সঙ্কট দেখা গেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ নগরবাসী।

নগরীর লালখান বাজার এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষার্থী অনিবার হেসেন পলিটেকনিক এলাকার চট্টগ্রাম মডেল পাবলিক কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। “তারপর কলেজে যাওয়ার জন্য আর কোনো যানবাহন না পেয়ে বাসায় ফিরে যাচ্ছি।”

নগরীর আরাকান সোসাইটির বাসিন্দা আতিকুর রহমান বলেন, কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে চান্দগাঁও আবাসিক হয়ে বহদ্দারহাট মোড় পর্যন্ত সড়কের ওপর বিভিন্ন স্থানে পানি জমে আছে। পানির কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে চলতি মৌসুমে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর কয়েক দফা তলিয়ে যায় চট্টগ্রাম নগরী।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নগরীর বিভিন্ন নালার পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি আগ্রাবাদ ও হালিশহর এলাকার বাসিন্দারা তাদের এলাকায় জলাবদ্ধতার জন্য মহেশখালের উপর দেওয়া বাঁধকে দায়ী করেন। মহেশখালের ওই পথ দিয়ে এসব এলাকার পানি কর্ণফুলী নদী হয়ে সাগরে যায়।

নগরবাসীর অভিযোগের মুখে গত ১৩ জুন বাঁধটি অপসারণ কাজ শুরু করে সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বাঁধ অপসারণের পর এখন জোয়ারের সময় বৃষ্টি হলে পানি নামতে না পারায় এসব এলাকার রাস্তায় পানি জমে থাকে।

আগ্রাবাদ ব্যাপারি পাড়ার বাসিন্দা তফাজ্জল হোসেন বলেন, “এখন তো জোয়ার-ভাটা দেখে আমাদের দিনের কাজকর্ম চলে। বিকাল সাড়ে ৩টায় আবার জোয়ার আসবে।

“সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছি। মূল সড়কে পানি আছে। বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে শুরু করেছে। এখনো বাড়িতে ঢুকেনি। বিকাল ঢুকতে পারে।”

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বার্তায় বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

“মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।”

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ডিউটি অফিসার বিজন রায় বলেন, বর্ষা মৌসুমে এ ধরনের বৃষ্টি হয়। এ বৃষ্টি আরও তিন-চারদিন চলতে পারে।

আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুসারে , চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ স্থানে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930