ধর্মগুরুর রায়ের পর ভারতে সহিংসতা

ভারতের স্বঘোষিত আধ্যাত্মিক গুরু গুরমিত রাম রহিম সিং ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর পঞ্জাব হরিয়ানায় ব্যাপক সহিংসতা শুরু করেছে তার ভক্তরা

সহিংসতার আশঙ্কায় আগে থেকে সেনা-পুলিশ সব প্রস্তুত রেখেও পরিস্থিতি বাগে আনা যায়নি। লঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েও পাঁচকুলা পরিস্থিতি পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না।

সেখানে পুলিশের গুলিতে অন্তত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা।

পঞ্জাব এবং হরিয়ানার বিভিন্ন স্থানে গন্ডগোল শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই দু’টি রেলস্টেশনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে ধর্মগুরু রাম রহিমের ক্ষুব্ধ অনুসারীরা। দু’টি থানাতেও অগ্নিসংযোগ করেছে তারা।

ধর্মীয় গোষ্ঠী ডেরা সাচ্চা সওদার সদর দফতর সিরসায় এবং পাঁচকুলায় রাম রহিমের অনুসারীরা সংবাদমাধ্যমকেও আক্রমণ করেছে। সংবাদকর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে ক্ষুব্ধ ডেরা সমর্থকরা।

চন্ডিগড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় শহরজুড়ে কয়েকটি স্থানে এবং পঞ্জাবজুড়ে কারফিউ জারি হয়েছে।

রাম রহিম সিংয়ের লাখো সমর্থককে চন্ডিগড়ে ঢুকতে দেওয়ার জন্য হরিয়ানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমারিন্দর সিং। চন্ডিগড় দুই রাজ্যেরই রাজধানী।

ধর্মগুরুর মামলার রায় শুনতে আগে থেকেই শহরটিতে রাম রহিমের দুই লাখের বেশি ভক্ত জড়ো হয়েছিলেন।

আদালতের রায় বিপক্ষে গেলে সহিংসতা শুরু হতে পারে- এমন আশঙ্কায় সকাল থেকে পাঁচকুলায় সেনাবাহিনী নামানো হয়। ৫০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয় হরিয়ানা ও পঞ্জাবে।

উত্তেজনার মধ্যেই সিরসায় নিজের সাংগঠনিক দপ্তর থেকে ১০০ গাড়ির বহর নিয়ে রওনা হয়ে আড়াইশ কিলোমিটার দূরে পাঁচকুলা আদালতে পৌঁছান রঙদার চরিত্র রাম রহিম সিং।

আদালত দুপুরে রায় ঘোষণার পরপরই ৫০ বছর বয়সী রাম রহিমকে কড়া পাহারার মধ্যে আম্বালা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। রায় শোনার পর আদালতের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার বহু সমর্থক। টেলিভিশন ফুটেজে ওই সময়ই রাম রহিমের অনুসারীদেরকে সহিংসতায় লিপ্ত হতে দেখা গেছে।

বিবিসি লিখেছে, একাধারে ধর্মপ্রচারক, সমাজ সংস্কারক, গায়ক, চিত্রনায়ক ও পরিচালক বাবা রাম রহিমের মতো বর্ণময় চরিত্র ভারতের অজস্র ধর্মগুরুর মধ্যেও বিরল। শিখ, হিন্দু, মুসলিম- সব ধর্মের চেতনা মিশিয়ে বাবা রাম রহিম তৈরি করেছেন তার আশ্রম- ডেরা সাচ্চা সওদা।

হরিয়ানায় গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রতি সমর্থন দিয়েছিলেন রাম রহিম। লাখ লাখ ভক্ত থাকায় বড় ভোট ব্যাংক বিবেচনা করে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির অনেক নেতাই তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রাখেন।অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির চিঠির সূত্র ধরে ২০০২ সালে এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে সিবিআই। সেখানে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে নিজের আশ্রমে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণ করেন রাম রহিম।

২০০৭ সালে শুনানি শুরুর পর দশ বছরের মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে। বিচারের পুরোটা সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন ডেরা সাচ্চা সওদার প্রধান।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031