মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাংলাদেশে থাকা মিয়ানমারের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির পর ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার নতুন রাষ্ট্রদূত রিনা প্রিথিয়াসমিয়ারসি সোয়েমারনোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের সামনে বৈঠকের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের মুখে পালিয়ে এসে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে।

বাংলাদেশ তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এলেও মিয়ানমার তাতে সাড়া দেয়নি। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়াদের মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবেও মেনে নিতেও তারা নারাজ।

এদিকে গত ২৪ অগাস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে পুলিশ পোস্ট ও সেনাক্যাম্পে হামলার পর সীমান্তে নতুন করে এই রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের হিসাবে, গত ১২ দিনে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৮৭ হাজার মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার নিন্দা জানিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে মালদ্বীপ।

ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী মিয়ানমারের এই নাগরিকদের মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

এই বিপুল সংখ্যক মানুষের বাড়তি দায়িত্ব বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝা বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের এই নাগরিকরা মাদক পাচার, জঙ্গি তৎপরতাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে তারা বিদেশেও পাড়ি জমাচ্ছে বলে তথ্য এসেছে বিভিন্ন সময়ে।

ইহসানুল করিম বলেন, “আমাদের নীতি যে অত্যন্ত স্পষ্ট, তা রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অন্য কোনো দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সৃষ্টিতে আমাদের ভূমি ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।”

মানবিক কারণে মিয়ানমারের বিপুল সংখ্যক নাগরিককে কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে স্থান দেওয়ার প্রশংসা করে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ সঠিক কাজই করেছে।

তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেরও প্রশংসা করেন বলে প্রেস সচিব জানান।

তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে ইন্দোনেশিয়ার অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা আলোচনায় তুলে ধরেন নতুন রাষ্ট্রদূত। আগামীতে বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নিজের দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরতে গিয়ে ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রদূত ৫০ আসনের উড়োজাহাজ তৈরিতে সাফল্য পাওয়ার কথা বলেন।

বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচলের বিষয়েও বৈঠকে কথা হয় বলে ইহসানুল করিম জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এলএনজি বিদ্যুৎ ইৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণে ইন্দোনেশিয়ার আগ্রহের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।

আর প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031