জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সমাজসেবা অধিদফতর, চট্টগ্রাম বিভাগের আয়োজনে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় আন্তঃ প্রাতিষ্ঠানিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ ২০১৮ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী, পরিচালক (উপসচিব), সমাজসেবা অধিদফতর, বিভাগীয় কার্যালয়, চট্টগ্রাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনাব বন্দনা দাশ, অতিঃ পরিচালক, সমাজসেবা অধিদফতর, বিভাগীয় কার্যালয়, চট্টগ্রাম। অনুষ্ঠানে সমাজসেবা অধিদফতর, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার উপপরিচালক, সমাজসেবা কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ এমএ আজিজ ষ্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সমাজসেবা অধিদফতর, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার ২০টি প্রতিষ্ঠানের শিশুদের মধ্য হতে মোট ৩৩ ইভেন্টে ১৩৫ জন প্রতিযোগী ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। অপরদিকে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় মোট ১৬ টি ইভেন্টে ২১৯ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যেমে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক জনাব মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম। এরপর চ্যাম্পিয়ন জেলা কুমিল্লার উপপরিচালক জেডএম মিজানুর রহমান খান তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
বিশেষ অতিথি সমাজসেবা অধিদফতর, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক (উপসচিব) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী প্রধান অতিথিসহ উপস্থিত সকল প্রতিযোগী এবং সুধীমন্ডলীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন সমাজসেবা অধিদফতর প্রতিবছর এতিম ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য এ ধরণের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। ফলে শিশুদের মধ্যে নেতৃত্বের গুনাবলী বিকশিত হয় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন এখানে যে সমস্ত শিশুরা রয়েছে তাদের বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অভিভাবক নেই। রাষ্ট্রই তাদের অভিভাবক, রাষ্ট্রের পক্ষে সমাজসেবা অধিদফতর তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকে, তিনি বলেন রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্বের অংশ হিসেবে সমাজসেবা অধিদফতর পিছিয়ে পড়া এতিম ও প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার ব্যবস্থাসহ সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে থাকে। পাশাপাশি প্রতি বছর তাদের দেহমন সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও খেলাধুলার আয়োজন করে থাকে। এর ফলে শিশু কিশোরেরা সার্বিকভাবে বেড়ে উঠার সুযোগ পায় এবং মানব সম্পদে পরিনত হতে পারে।
প্রধান অতিথি মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। তিনি উপস্থিত শিশু কিশোরদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এ ধরণের প্রতিযোগিতা শিশুদের মধ্যে প্রতিযোগতিামূলক মনোভাবের সৃষ্টি করে, ফলে তারা ক্রমান্বয়ে ভাল কিছু করার অনুপ্রেরণা লাভ করে। তিনি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের আন্তরিকতা নিয়ে প্রতিবন্ধী ও অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর, তাদের সুখ দুখের অংশীদার হওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশু সমস্যা নয়, সম্পদ। তিনি শিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন শিক্ষাই মানুষকে মানবিক গুণাবলী অর্জনের পথে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যায়। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, জ্ঞানার্জনের এবং শিক্ষার কোন বিকল্প নাই। তিনি এই শিশুদের জীবনমান উন্নয়নে তার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগতিার আশ্বাস দেন এবং ১ (এক) লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করবেন মর্মে ঘোষনা প্রদান করেন।
অতিথিদের বক্তব্যের পর প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অংশগ্রহণে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্টের ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীকে এবং সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্টের ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারীকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া ১০ জন প্রতিযোগীকে ‘ব্যক্তিগত চ্যাম্পিয়ন’ ক্যাটাগরীতে, ক্রিকেট (বালক ও বালিকা) দলের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দলকে, মার্চপাস্ট ও ডিসপ্লে দলের ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকারী দলকে ট্রফি প্রদান করা হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার ২০ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক চ্যাম্পিয়ন ট্রফি অর্জন করে কুমিল্লা জেলা দল।
