চট্টগ্রাম : লাখো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৪৭তম জশনে জুলুস

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ৪৭তম জশনে জুলুস। লাখো মানুষের এ জুলুসে নেতৃত্ব দেন আওলাদে রাসুল, শাহজাদা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ হামিদ শাহ (ম জি আ)।বুধবার (২১ নভেম্বর) নগরের মুরাদপুর-ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে সকাল সোয়া ৯ টায় জুলুস বের হয়। সকাল হতেই দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষের ঢল নামে জামেয়া মাদ্রাসা অভিমুখে।মুরাদপুর, পাঁচলাইশ, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, দেওয়ানবাজার, সিরাজদ্দৌলা রোড, আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড, চেরাগি পাহাড়, জামালখান, চট্টগ্রাম কলেজ হয়ে জুলুস পুনরায় মাদ্রাসায় ফিরে যায়। জুলুসকে ঘিরে ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণে সাজানো হয়েছে আলমগীর খানকা, জামেয়া মাদ্রাসা, মুরাদপুর ও আশপাশের এলাকা। মুরাদপুর থেকে মাদ্রাসা পর্যন্ত কয়েকশ’ ভাসমান বিক্রেতা টুপি, আতর, তসবিহ, পাঞ্জাবি-পাজামা, শীতের পোশাক, খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন।জুলুসের মিডিয়া ডেস্কের আহ্বায়ক, পিএইচপি ফ্যামিলির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির হোসেন সোহেল জানান, ১৯৭৪ সালে কয়েক হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিকে নিয়ে দরবারে সিরিকোটের আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহের (র.) নির্দেশ ও রূপরেখা অনুসরণ করে আনজুমান ট্রাস্ট চট্টগ্রামে প্রথম জুলুস প্রবর্তন করে। যা এখন চট্টগ্রামেরর ইতিহাস-ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গে রূপ নিয়েছে।আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের (এএসএফ) প্রধান সাদেক হোসেন পাপ্পু জানান, ১২ বছর আগে এএসএফ প্রতিষ্ঠা হয়। আমাদের ৩০০ স্বেচ্ছাসেবী এএসএফ সদস্য ১৫ পয়েন্টে আছেন। নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক আছেন ৪ হাজার। এর বাইরে আনসার, পুলিশ, র‌্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।হুজুর কেবলার জন্য বিশেষভাবে তৈরি গাড়িটি চালান মোহাম্মদ হোসাইন খোকন। তিনি বলেন, ১০ বছর ধরে হুজুর কেবলার জশনে জুলুসে আমাদের গাড়িটি ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি শুধু জুলুসেই বের করা হয়। লাখো মানুষের ভিড়ে খুব ধীরে ধীরে আদবের সঙ্গে গাড়িটি চালাই। এটি আ​মার জন্য সৌভাগ্যের।জুলুসে অংশ নেন আল্লামা মুফতি ওবায়দুল হক নঈমী, জামেয়ার অধ্যক্ষ মুফতি মুহাম্মদ অছিয়র রহমান, মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ সরওয়ার উদ্দিন, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ বদিউল আ ম রিজভী, আনজুমানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, গাউসিয়া কমিটির চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার প্রমুখ।আনজুমানের এসভিপি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, পৃথিবীর বৃহত্তম জুলুস শেষে হুজুর কেবলা জামেয়া মাঠে মোনাজাত পরিচালনা করবেন।সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৭৪ সাল থেকে চট্টগ্রামে জুলুস হচ্ছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় জুলুস। ৬০ লাখ মানুষের সমাগম হচ্ছে এবার। সারা দেশে, বিশ্বের অনেক দেশে জুলুস ছড়িয়ে পড়েছে। মিশরে রাষ্ট্রীয়ভাবে জুলুস বের করা হয়। আমরা আশা করবো, নবীজীর শানে আয়োজিত চট্টগ্রামের জুলুস গিনেস বুকে স্থান পাবে; ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের স্বীকৃতি পাবে।

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031