॥ লিটন ভট্টাচার্য্য, খাগড়াছড়ি ॥ খাগড়াছড়িতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে শোক র্যালী ও আলোচনা সভা করেছে জেলা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ। মাস ব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে রবিবার খাগড়াছড়ি জেলা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোক র্যালী কদমতলীস্থ জেলা পরিষদ রেষ্ট হাউজ থেকে শুরু হয়ে জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধুর চেতনা মঞ্চে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
খাগড়াছড়ি জেলা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের খোকনেশ্বর ত্রিপুরা সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান প্রতিমন্ত্রী যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্য বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন দেশ করার কারিগড়, আমরা যদি ’৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ’৬৯ সালের ছাত্রদের ১১ দফা, আগরতলা ষড়যন্ত্র বা ৭ই মার্চের ভাষণ দেখি, সবই কিন্তু অর্থনীতিকে কেন্দ্র করেই। আজ দেশে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি গঠিত হয়েছে, যারা নব্য আওয়ামী লীগার নামে পরিচিত। তারা বঙ্গবন্ধুর চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করতে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে। এই নব্য আওয়ামী লীগার থেকে দেশের সাধারণ মানুষকে অবশ্যই সজাগ থাকতে হবে।
এই দেশটিকে সোনার বাংলায় রূপান্তর করার জন্য মানুষের পেটে ভাত সংস্থানের জন্য যা যা করণীয় তা তিনি করেছেন। তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনকালকে বলা যায় এদেশের জন্য একটি আদর্শ স্বর্ণযুগ। এই সাড়ে তিন বছরে তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃষি থেকে শুরু করে দারিদ্র্য বিমোচন, শিল্পোন্নয়ন, ব্যাংকিং সর্বত্র চেষ্টা করেছেন দেশটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। এমনকি সমুদ্র সম্পদ নিয়েও তিনি কথা বলেছেন। বঙ্গবন্ধুর যে দূরদর্শীসম্পন্ন নেতৃত্ব ছিল তা যদি আর কিছুদিন পরিচালিত হতো তাহলে অবশ্যই দেশ ও জাতির মঙ্গল সাধিত হতো। আসলে আমাদেরই দুর্ভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধুর মতো মহৎপ্রাণ লোকদের আমরা ধরে রাখতে পারিনি। এটি সত্যি একটি জাতির অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্য ষড়যন্ত্র ছিল।বঙ্গবন্ধুর এবং তাঁর পরিবারের প্রতি নির্মম নিষ্ঠুরতা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এই নির্মম নিষ্ঠুরতার কোনো ধরনের শৈথিল্য অথবা ক্ষমা প্রদর্শনের সুযোগ নেই। জনগণের কবি বঙ্গবন্ধু। জনগণের মানুষ বঙ্গবন্ধু। মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু। আর তাই তাঁর অর্থনৈতিক দর্শনও সাদামাটা ক্ষুধামুক্ত সোনার বাংলা। আজ বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ হাতে নিয়েছেন। তিনি প্রমাণ করছেন দেশের মানুষকে বঙ্গবন্ধুর মতো তিনি ভালোবাসেন।
বঙ্গবন্ধু যে বিশাল বটবৃক্ষের চারা রোপণ করেছিলেন তা আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা ফুলে ফলে শোভায় শোভিত করছেন। আমরা বিশ্বাস করি এ দেশ আমাদের, এ মাটি আমাদের, পাকিস্তান প্রেতাত্মারা পাকিস্তান চলে যেতে পারে কিন্তু আমরা আমৃত্যু বেঁচে থাকব। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। আমরা বিশ্বাস করি শেখ হাসিনা তার পিতার মতো অবিচল দৃঢ় প্রত্যয়ে আজ দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন সামনের কাতারে। আমাদের বিশ্বাস দেশে শান্তি থাকবে, অসাম্প্রদায়িক চেতনা উদ্ভাসিত হবে।
খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, আমরা কোনোদিন কখনো বঙ্গবন্ধুর যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারিনি। বঙ্গবন্ধু যে সুন্দরভাবে দেশ গঠনে দেশের সেনাবাহিনী গড়েছিলেন, পুলিশকে সংগঠিত করেছিলেন, শিল্প-কলকারখানা স্থাপন করেছিলেন তা আসলে কোনো যথাযথ ফল দিতে পারেনি।
বিশেষ অতিথি আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হাজ্বী মোঃ নুরুন্নবী চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, সহ- সভাপতি রণ বিক্রম ত্রিপুরা, জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম.এ জব্বার, এড্ আশুতোষ চাকমা, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি খাগড়াছড়ি‘র সদস্য সচিব মোঃ শানে আলম, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদিকা বাসতি চাকমা, যুবলীগের সভাপতি যতন কুমার ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক কে,এম ইসলাইল হোসেন, সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান হেলাল, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ হোসেন, ও বিভিন্ন সদর উপজেলা ইউনিয়নের থেকে আগত সভাপতি/ সম্পাদক বৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এর আগে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে জাতির পতি প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
