আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীর বুকে তুলে ধরতে ৪৪ বছর আগে ১৯৭১ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের মুহূর্তগুলো স্মরণের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হবে। এবার স্বাধীনতার বিজয়ের চৌচল্লিশ বছর উদযাপন করছে পুরো জাতি।
১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর লে. জেনারেল আমীর আব্দুল¬াহ খান নিয়াজী ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে নিঃশর্তে সশস্ত্র আত্মসমর্পণ করেন। চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।
এ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ‘যার যা কিছু আছে, তা নিয়েই স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান’। পরে একাত্তরের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
রাষ্ট্রপতি এ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
জাতি গঠনে স্বাধীনতার চেতনা পুনরুজ্জ্বীবিত করতে দিবসটি সরকারিভাবে উদযাপনে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
১৫ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিশু একাডেমী মিলনায়তনে চিত্রাংকন, দেশাত্মবোধক গান ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা। বিকাল ৩ টায় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
১৬ ডিসেম্বর কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে গত মধ্যরাত ১২ টায় ৩১ বার তোপধ্বর্নীর মাধ্যমে হবে বিজয় দিবসের সুচনা। আজ রাত ১২ টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পুষ্পস্তবক অর্পণ, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোরন, সকাল ৯টায় রাঙ্গামাটি ষ্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ। পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, স্কাউট, গালর্স গাইট ও স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করবেন। সকাল ১০টায় নানিয়ারচর বুড়িঘাটে বীরশ্রেষ্ট মুন্সি আবদুর রউফ এর মাজারের জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ, সকাল সাড়ে ১১টায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হবে।
বেলা ১ টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, শিশুপরিবার ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার সরবরাহ করা হবে।
নিজস্ব সময় অনুযায়ী জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপসানালয়ে মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।
বিকাল ৩ টায় কাবাডি প্রতিযোগিতা, বিকাল সাড়ে ৩ টায় অনুষ্ঠিত হবে রাঙ্গামাটি ষ্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে প্রীতি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ফুটবল, টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট, রশিটানাটানি ও মহিলা ক্রীড়া অনুষ্টান।
সন্ধ্যা ৬টায় শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া একই সময়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে আলোচনা, পোস্টার প্রদর্শনী ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে স্থানীয় সংবাদপত্র দৈনিক গিরিদর্পণ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।
এছাড়া রাঙ্গামাটির আঞ্চলিক পরিষদ, জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ব্যাপক আলোসজ্জা করা হয়েছে।
