সুন্দরবনের হিরনপয়েন্টের অদূরে বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় শুক্রবার সকাল ১০টায় এক হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ডুবে গেছে ‘এমভি আইজগাতি’ নামে একটি কার্গো জাহাজ। ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় অবস্থানরত মাদার ভ্যাসেল থেকে কয়লা বোঝাই করে মংলা বন্দরে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় জাহাজে থাকা ১২ নাবিককে উদ্ধার করে এমভি বসুন্ধরা ৩৭ কার্গো নামে অন্য একটি জাহাজে । তবে কেউ নিখোঁজ রয়েছেন কিনা তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে মংলা কোস্টগার্ডের একটি দল রওয়ানা হয়েছে বলে জানা গেছে। মাদার ভ্যাসেলে শ্রমিক নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান স্টিভেডরস মেসার্স নূরু অ্যান্ড সন্সের স্বত্তাধিকারী এইচ এম দুলাল জানান, বঙ্গোপসাগরের ফেয়ারওয়ে বয়ায় এলাকায় অবস্থানরত মাদার ভ্যাসেল ‘এমভি লেডীমেরি’ থেকে বৃহস্পতিবার রাতে কয়লা বোঝাই করা হয় কার্গো জাহাজ এমভি আইজগাতিতে। শুক্রবার ভোররাতে কার্গো জাহাজটি মংলা বন্দরের উদ্যেশে ফেরার পথে ঘনকুয়াশা ও উত্তাল ঢেউয়ে পড়ে দিক হারিয়ে ডুবে চরে আটকে যায়। এ সময় তলা ফেটে ডুবে যায় জাহাজটি। এর পর কার্গোর মাস্টারসহ নাবিকরা সমুদ্রে ভাসতে থাকলে একই নৌ পথে আসা অপর একটি জাহাজ নাবিকদের উদ্ধার করে।
মাদার ভ্যাসেলের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট এইচ টি বদিউল আলম জানান, ডুবে যাওয়া কয়লার মালিক ও আমদানীকারক যশোরের নওয়াপাড়া ট্রেডার্স। ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজটির মালিক খুলনার নৌ পরিবহন মালিক সমিতির মেম্বর ফারুক কাজী।
মংলা কোস্টগার্ডের অপারেশন কর্মকর্তা লে. রাহাতুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে কোস্টগার্ডের দু’টি দল শুক্রবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। তবে ঘটনাস্থল মংলা বন্দর থেকে প্রায় ১শ’ কিলোমিটার দূরে। সমুদ্রের মধ্যে এবং দূর্গম যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে উদ্ধার তৎপরতা ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি। তবে কার্গোটিতে কতজন নাবিক ছিল কিংবা কেউ নিখোঁজ আছেন কিনা তা তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।
তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থলে মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। যে কারণে কোস্টগার্ডের অপারেশন দল ফিরে না আসা পর্যন্ত বিস্তারিত জানানো সম্ভব নয়।
মংলা বন্দরের হারবার বিভাগ জানায়, হিরনপয়েন্ট ও ফেয়ারওয়ের ১০নং বয়া এলাকায় কয়লা বোঝাই কার্গো জাহাজটি ডুবে আছে যা বন্দরের মূল চ্যানেল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে। এ কারণে মংলা সমুদ্র বন্দরে পণ্যবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন ও নির্গমনে কোনো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা নেই।
গভীর সাগরে এই কার্গো ডুবির ফলে বন্দর চ্যানেলের কোনো ক্ষতি বা ঝুকি নেই বলে নিশ্চিত করেছে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে কার্গোটি উদ্ধারের ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে কি না তা জানাতে পারেনি মংলা বন্দরের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানানো ওই সূত্রটি।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান একেএম ফারুক হাসান জানান, হারবাল মাস্টার ওয়ালিউল্লাহকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ডুবে যাওয়া কার্গোটিকে নজরদারীতে রাখার জন্য। তবে ওই এলাকার সাগর উত্তাল থাকায় কার্গোটি উদ্ধারের তৎপরতা শুরু করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি জানান।