ডু প্লেসিসে ভর করে শ্রীলংকাকে ৪০ রানে পরাজিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা

ফাফ ডু প্লেসিসের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ভর করে মঙ্গলবার কেপ টাউনের নিউল্যান্ডসে শ্রীলংকাকে চতুর্থ ওয়ানডেতে ৪০ রানে পরাজিত করেছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। এর ফলে লংকান অধিনায়ক উপল থারাঙ্গার সেঞ্চুরি বিফলে গেছে।
ডু প্লেসিসের ১৮৫ রানের কল্যাণে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে ব্যাটিং থেকে ৫ উইকেটে ৩৬৭ রানের পাহাড় সমান স্কোর গড়ে তুলে। ডু প্লেসিসের এই স্কোর দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে রেকর্ড থেকে তিন রান কম। বিশাল এই স্কোরের পরেই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগের তিন ম্যাচে বিধ্বস্ত শ্রীলংকার ব্যাটসম্যানরা হয়ত আরেকটি বড় পরাজয়ের শঙ্কায় পড়তে যাচ্ছে। কিন্তু থারাঙ্গার ৯০ বলে ১১৯ রানের ঝকঝকে ইনিংসটি শুধুমাত্র পরাজয়ের ব্যবধানই কমায়নি, প্রতিপক্ষের প্রশংসাও কুড়িয়েছে। এক পর্যায়ে লংকানরা জয়ের স্বপ্ন দেখলেও ইনিংসের শেষের দিকে ৪.৩ ওভারে মাত্র ২০ রানে শেষ ৬ উইকেটের পতন ঘটলে লংকানদের ইনিংস ৩২৭ রানে শেষ হয়।
ম্যাচ শেষে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স বলেছেন, ফাফ অসাধারণ খেলেছে। থারাঙ্গাও দারুন একটি ইনিংস উপহার দিয়েছে। কিন্তু দিনের শেষে কার্যত সেটা কাজে আসেনি। আমি মনে করি, বোলারদের কারণেই আমি আজ বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলাম।
থারাঙ্গা তার বাঁহাতি সঙ্গী নিরোশান ডিকওয়েলাকে সাথে নিয়ে ১০ ওভারে ১০০ রান যোগ করেন। প্রথম উইকেটে তাদের কাছ থেকে ৯৮ বলে ১৩৯ রানের পার্টনারশীপ এসেছে। ডুয়াইন প্রিটোরিয়াসের বলে মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেবার আগে ডিকওয়েলা ৪৭ বলে ৫৮ রান সংগ্রহ করেছেন। কুশাল মেন্ডিস (২৯) ও থারাঙ্গা মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৪ রান যোগ করেন। এই পার্টনারশীপে শ্রীলংকা বেশ ভালভাবেই তাদের প্রয়োজনীয় রান রেটের তুলনায় এগিয়ে ছিল। ওয়েইন পারনেল এসে দুজনের উইকেট তুলে নিলে লংকানদের স্কোরে কিছুটা ধীর গতি আসে। থারাঙ্গা ব্যাক ওয়ার্ড পয়েন্টে জেডি ডুমিনির হাতে ধরা পড়ার আগে ৯০ বলে ১১টি বাউন্ডারি ও ৭টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। মাঠ ত্যাগের সময় স্বাগতিক দর্শকরা দাঁড়িয়ে তাকে অভিনন্দিত করতে ভুল করেননি। ম্যাচ শেষে থারাঙ্গা বলেন, আজকের ম্যাচে ভাল শুরু করাটা জরুরী ছিল। সেটা আমরা করে দেখিয়েছি। আজকের ব্যাটিং পারফরমেন্সে আমি দারুন সন্তুষ্ট। দুর্ভাগ্যবশত: আমরা উইকেট বেশি হারিয়ে ফেলেছিলাম।
টসে জিতে প্রথম ব্যাটিং করার পুরো সুবিধাটাই কাজে লাগিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ডু প্লেসিস ১৪১ বলে ১৬টি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। যদিও অসাধারণ এই ইনিংসেও তিনি গ্যারি কারর্স্টেনের দীর্ঘদিনের ১৮৮ রানের অপরাজিত ইনিংসের রেকর্ড ভাঙ্গতে পারেননি। ১৯৯৬ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে কারর্স্টেন এই রান সংগ্রহ করেছিলেন।
ডু প্লেসিস কুইনটন ডি কক (৫৫) ও ডি ভিলিয়ার্সের (৬৪) সাথে সেঞ্চুরি পার্টনারশীপ করেছেন। অথচ স্বাগতিকদের ইনিংসের শুরুটা মোটেই ভাল ছিল না। মাত্র এক রানে হাশিম আমলা প্রথম স্লিপে লাহিরু কুমারার বলে ক্যাচ তুলে দেবার পরে প্রথম তিন ওভারে প্রোটিয়াদের সংগ্রহ ছিল মাত্র চার রান। কিন্তু সেই অবস্থা থেকে দ্রুতই ডু প্লেসিস ও ডি কক পরিস্থিতি সামলে উঠেন। বাঁহাতি ডি কক সিরিজে এই প্রথম নিজের ফর্ম ফিরে পেলেন। ৪০ বলে ঝড়ো গতিতে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়া ডি কক দ্বিতীয় উইকেটে ডু প্লেসিসকে সাথে নিয়ে ৮৭ বলে ১০০ রান যোগ করেছেন। ডি কক ৪৬ বলের ইনিংসে সাতটি বাউন্ডারি ও দুটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। তৃতীয় উইকেটে ডু প্লেসিস ডি ভিলিয়ার্সকে সাথে নিয়ে ১২২ বলে ১৩৭ রান যোগ করেন। ডি ভিলিয়ার্স ৬২ বলে চারটি বাউন্ডারির সহায়তায় করেছেন ৬৪ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে ৩৬৭ (ডু প্লেসিস ১৮৫, ডি ভিলিয়ার্স ৬৪, ডি কক ৫৫; পাথিরানা ২-৫৫)
শ্রীলংকা অল আউট ৩২৭, ৪৮.১ ওভার (থারাঙ্গা ১১৯, ভিরাকোদ্দি ৫৮, ডিকওয়েলা ৫৮; পারনেল ৪-৫৮, রাবাদা ২-৫০, প্রিটোরিয়াস ২-৫৫)
ফল : দক্ষিণ আফ্রিকা ৪০ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : ফাফ ডু প্লেসিস (দক্ষিণ আফ্রিকা)
সিরিজ : পাঁচ ম্যাচের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪-০ ব্যবধানে জয়ী

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31