পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশের পুঁজি বাজারে তাঁর সরকারের অব্যাহত সহযোগিতার অংশ হিসেবে সাধারণ বিনিয়োগকারিদের জন্য দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম’র (ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি প্রোগ্রাম) উদ্বোধন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। পুঁজিবাজার হবে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নের এক নির্ভরযোগ্য উৎস।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম’র উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী এর আগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন।
২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এক লাখ স্কয়ার ফুট আয়তনের ১০ তলা এই ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
জনগণের সঞ্চয় অভ্যাস গড়ে তোলা, সঞ্চিত অর্থের সঠিক বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারার সক্ষমতা অর্জনে বিািনয়োগ শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালি হুজুগে মাতে। হুজুগে মেতে সব শেষ করে, তারপর হায় হায় করে।
তিনি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যেখানে বিনিয়োগ করবেন সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানুন, ভালোভাবে খোঁজ-খবর নিন। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা ও আর্থিক বিবরণী জেনে নিন। কিছু না জেনে বিনিয়োগ করে সব হারাবেন, তারপর সব দোষ অর্থমন্ত্রী আর সরকারের, এটা যেন না হয়। ঝুঁকিটা বিনিয়োগকারীদের নিতে হবে। জেনে-বুঝে সঠিক জায়গায় সঠিক বিনিয়োগ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বস্তরের বিানিয়োগকারিদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং যৌক্তিক বিানিয়োগের কলা-কৌশল সম্পর্কে দিক নির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে বিএসইসি’র দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।
এতে বিনিয়োগকারী উপকৃত হবার পাশাপাশি জ্ঞাননির্ভর বিনিয়োগ গোষ্ঠীর উপস্থিতির ফলে দেশের পুঁজিবাজার আরো গতিশীল হবে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি- বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, স্টক এক্সচেঞ্জ ও তালিকাভূক্ত কোম্পানিসমূহ সুশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বাজারের কর্মকান্ডের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে তুলবে।
যা সেবা আর অবকাঠামো খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তাঁর সরকারের পদক্ষেপের ফলে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন অর্থনৈতকভাবে বাংলাদেশ যথেষ্ট শক্তিশালী এবং সারাবিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। কাজেই পুঁজিবাজার ও অব্যাহত বিকাশমান এবং সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে আজ বিশ্বসভায়ও আমরা ধীরে ধীরে প্রতিফলিত হচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিকাশ, অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আর্থিক শৃংখলা ও স্থিতিশীলতা সমুন্নত রাখা। সেই লক্ষ্য অর্জনেই সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য পুঁজিবাজার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘমেয়াদি পুঁজি সরবরাহের ব্যবস্থা করে থাকে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীগণ তাদের সঞ্চয় সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের সুযোগ পান।
এরফলে শিল্প ও কলকারখানা বিকাশের পাশাপাশি বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সূত্র : বাসস

Archive Calendar
Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031